বিশেষ প্রতিনিধি:
সাতক্ষীরার কলারোয়ার পৌর সদরের থানার সামনে অবস্থিত চৌধুরী মার্কেটের ভাড়াটিয়া ম্যাসেজ্ঞার সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি কতৃক গ্রাহকের ৫ কোটি টাকা ফেরতের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন। লিখিত সংবাদ সম্মেলন করেন প্রতারণার শিকার হওয়া কলারোয়া উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দাগণ। ৭ই সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টায় কলারোয়া রিপোর্টার্স ক্লাবে একজনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগীদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন তাজামুল ইসলাম, ঝিকরা গ্রামের শেখ আসাদুজ্জামান, ব্রজবক্স গ্রামের রাশিদা খাতুন কোটাবাড়ি গ্রামের রাজিয়া সুলতানা তুলসীডাঙ্গা গ্রামের আবদুর রউফ।
তার বক্তব্য বলেন, কলারোয়া মেসেঞ্জার সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লিমিটেডের গ্রাহক ও সদস্য হিসেবে দীর্ঘদিন থেকে লেনদেন করে আসছিলাম। সেই হিসেবে আমাদের সঞ্চয় ও আমানত হিসেবে রক্ষিত আনুমানিক পাঁচ কোটি টাকা জমা ছিল। গত কিছুদিন যাবত প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কলারোয়া উপজেলার সোনাবাড়ী ইউনিয়নের বেলী গ্রামের মৃত মাজেদ মোল্লার ছেলে কামরুজ্জামান বাবু, বোয়ালিয়া গ্রামের আনোয়ার গাজীর ছেলে আজাদ হোসেন, কোটাবাড়ির মৃত হামজার আলীর ছেলে শেখ মারুফ হোসেন, অত্র সমিতির সভাপতি কামরুজ্জামান বাবুর স্ত্রী তানিয়া সুলতানা, পৌর সদরের তুলসীডাঙ্গা ১ ওয়ার্ডের বাসিন্দা অত্র সমিতির সহ-সভাপতি সোহরাব হোসেন, বোয়ালিয়া গ্রামের আজাদ হোসেনের স্ত্রী অত্র সমিতির কোষাধাক্ষ রেক্সোনা পারভীন আমাদের সাথে কোন যোগাযোগ না করায় একপর্যায়ে অফিসে উপস্থিত হয়ে দেখতে পাই ঐ প্রতিষ্ঠানের অফিসের তালা ঝুলছে।
আশপাশে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি যে প্রতিষ্ঠানটিতে গত কয়েকদিন ধরে তালা ঝুলছে। এমতা অবস্থায় আমরা সাধারণ শান্তিপ্রিয় মানুষ নিরুপায় হয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক, সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার কলারোয়া, অফিসার ইনচার্জ কলারোয়া থানার অবগতি করলাম যাতে সুব্যবস্থা করেন। তাজামুল ইসলাম বলেন, কামরুজ্জামান বাবুসহ সমিতির অন্যান্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিগণ আমাকে লভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে ১৬ লক্ষ টাকা নেয়। কয়েক মাস লভ্যাংশ দিয়েছিল। ১০ লক্ষ টাকা ও ৬ লক্ষ টাকা আলাদা আলাদা দুইটা ডিপোজিট করেছিলাম। টাকা উত্তোলনের সময় চলে আসলে অফিসে গেলে অফিস বন্ধ দেখতে পাই।
শেখ আসাদুজ্জামান বলেন, আমার কাছ থেকে ৫ লক্ষ টাকা নিয়েছিল লভ্যাংশ দেয়ার কথা বলে। এবং কিছুদিন লভ্যাংশ দিয়েছিল। বেশ কিছুদিন টাকা না দেওয়ায় তাদের অফিসে গিয়ে দেখি তালা বন্ধ। রাশিদা খাতুন বলেন, কামরুজ্জামান বাবু গ্রামের ভাই সম্পর্কে হয়। বিভিন্নভাবে আমাকে ভুলিয়ে-ভালিয়ে আমার কাছ থেকে ৯ লাখ টাকা নিয়েছিল। লভ্যাংশ দেবে বলে। জুলাই মাসে ১৭ তারিখে আমার মূল টাকা উত্তোলনের সময় ছিল। দুই তারিখে তার সাথে কথা হয়েছিল ২২ তারিখ থেকে তার কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি। এখন সে উধাও। স্ত্রীর কাছে গেলে বলে টাকা দিয়ে দেবো।
বিধবা রাজিয়া সুলতানা বলেন, অত্র সমিতির শেখ মারুফ হোসেন আমাকে লভ্যাংশের টাকা দেবে বলে আমার কাছ থেকে ৫ লক্ষ টাকা দিয়ে নিয়েছে। শুধু আমার কাছ থেকে নয় গ্রামের অনেক মহিলাকে টার্গেট করে যাদের স্বামী বিদেশ আছে বা কোনভাবে অল্প কিছু টাকা আছে তাদেরকে টার্গেট করে এরা। আমি বিধবা অসহায় মানুষ আমি যাতে টাকা ফেরত পেতে পারি তার জন্য প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সুদৃষ্টি কামনা করছি। দিনমজুর আব্দুর রউফ বলেন, আমি অন্যের জমিতে দিনমজুরি করে সংসার চালায়। মেসেঞ্জার সমবায় সমিতির সাথে কিভাবে জড়িয়ে পড়েছি জানিনা। আমাকে বুঝিয়েছিল এটা ইসলামি সমবায় সমিতি এটার মাধ্যমে টাকা লেনদেন করা সম্পূর্ণ হালাল। তাদের কথা বিশ্বাস করে অল্প অল্প করে জমানো আমার তিন লক্ষ টাকা তাদের হাতে তুলে দেই। আমার মেয়ের বিয়ের কথা চলছিল এসেছিলাম টাকা তোলার জন্য দেখলাম তালা বন্ধ। আমার এখন বয়স হয়েছে আমি আর কাজ করতে পারছি না। আমার দুটি সন্তান আছে তাদের ভবিষ্যৎ করতে হবে। আমার মরা ছাড়া আর কোন পথ খোলা নেই। আমি প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সুদৃষ্টি কামনা করছি। যাতে আমি আমার টাকা ফেরত পেতে পারি।