মোঃ মাহ্ফুজুল হক খান (জিকু),সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টারঃ
কিশোরগঞ্জের সদর উপজেলার মহিনন্দ ইউনিয়নের কাশোরারচর আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর প্রদানে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগে জানা যায়, আশ্রয়ন প্রকল্পের সংশ্লিষ্ট কমিটির একে অপরের যোগসাজশে প্রকৃত ভূমিহীনদের বঞ্চিত করে বাড়ি ঘর রয়েছে এমন ব্যাক্তিদের আশ্রয়ন প্রকল্পে গৃহ বরাদ্দ দিয়েছে। ফলে প্রকৃত ভূমিহীনদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
সরজমিনে আশ্রয়ন প্রকল্পে গিয়ে অনুসন্ধানে জানা যায়, আশ্রয়নে গৃহ পেয়ে এখন ভাড়া দিয়ে নিজ বাড়িতে অবস্থান করছেন, কেউবা গৃহ পেয়ে তালাবদ্ধ করে রেখে দেয়াসহ একই পরিবারের মা-মেয়ে, জামাই-শশুরদের গৃহ প্রদানের মত চাঞ্চল্যকর তথ্য।
অভিযোগের ব্যাপারে সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার রেহেনা বেগম বলেন, সত্যি কথা বলতে কি অনেকেই ঘরবাড়ি থাকা সত্যেও গৃহ পেয়েছে আবার প্রকৃত ভূমিহীনদের অনেকেই গৃহ পায়নি রহস্যজনক কারণে। তাদের মধ্যে হাসিনা বেগম (গৃহ নং ২৭) বলে উল্লেখ করেন।
অনুসন্ধানে আরও জানা যায় (গৃহ নং৩৪)
ওমর ফারুকও আশ্রয়ন প্রকল্পে বসবাস না করে অন্যত্র বসবাস করেন। গৃহনং ৩ বাদশা মিয়া প্রকল্পের গৃহে বসবাস না করে ভাড়া দিয়ে রেখেছেন।
অপরদিকে ভাটুয়ারপাড়া গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে ভূমিহীন হাফিজ উদ্দিনকে ঘর বাড়ি আছে মর্মে বাতিল করে দিয়েছে। অথচ ছক ১”ক”শ্রেনীর (ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের) তালিকা ইউনিয়ন মহিনন্দ সিরিয়াল নং২৬ঃইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মোঃমোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে অনৈতিক ভাবে লাভবান হয় জমি ও ঘর আছে বলে বাতিলেরও অভিযোগ করেছে এলাকাবাসী।
বর্তমান ইউপি সদস্য হারুন মিয়া বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সর্ববৃহৎ মানবিক আশ্রয়ণ প্রকল্প প্রতিটি বাড়ির সঙ্গে একেকটি পরিবারের স্বপ্ন জড়িয়ে রয়েছে। আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে সরকার দেশের ভূমিহীন দরিদ্র মানুষের বাসস্থানের চাহিদা পূরণ করে তাদের জীবনধারা স্বাভাবিক ও সমুন্নত রাখার চেষ্টা করছে। সরকারের উদ্দেশ্যটি যে মহৎ-এতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু জনপ্রতিনিধিদের অনৈতিকভাবে অর্থ গ্রহণের কারণে দরিদ্র জনগোষ্ঠী ঘর না পেয়ে যদি স্বচ্ছলরা পায় তাহলে সেটি হল হতদরিদ্র মানুষের জন্য দুর্ভাগ্য। সেই সাথে কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদের সামনে প্রতিদিন ভিক্ষা করে অন্ধ ও প্রতিবন্ধী সাহারা খাতুন এবং নিঃসন্তান সাইদুর রহমান দম্পত্তিকে একটি গৃহ প্রদানের দাবি জানান তিনি সহ এলাকাবাসী।
মহিনন্দ ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ লিয়াকত আলী জানান, অভিযোগগুলোর কোন ভিত্তি নেই, একটি মহল সম্ভবত ষড়য়ন্ত্র করছে। তাছাড়া প্রকল্প কমিটি ও সার্ভে রিপোর্ট অনুযায়ী বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এখানে উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউএনও ও সরকার দলীয় আওয়ামীলীগ নেতারা এবং ভূমি অফিসসহ যাচাই বাছাই করে দেয়া হয়েছে।
অভিযোগ প্রসঙ্গে কিশোরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী বলেন,এ বিষয়ে কেউ কোন অভিযোগ করেননি। তাছাড়া প্রত্যেকটি ঘর সার্ভে রিপোর্ট অনুযায়ী দেওয়া হয়েছে।এরপরও কেউ অভিযোগ করলে ক্ষতিয়ে দেখা হবে।