গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি মোঃ আব্দুল খালেক মিয়া:-  প্রাণঘাতী ‘লাম্পি স্কিন ডিজিজ’ বা এলএসডি নামে আরেক ভাইরাসের দেখা মিলেছে গাইবান্ধা জেলার বিভিন্ন এলাকায় এ ভাইরাস গবাদি পশুকে আক্রমণ করে থাকে। গাইবান্ধা জেলার বিভিন্ন এলাকায় এ ভাইরাসে শত শত গরু আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। এর কোনো প্রতিষেধক না থাকায় গরু নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছে এলাকার জনগনও খামারিরা। এলএসডি গরুর জন্য একটি ভয়ঙ্কর ভাইরাসজনিত চর্মরোগ, যা খামারের ক্ষতির কারণ।জানা যায়, ১৯২৯ সালে সর্বপ্রথম আফ্রিকা মহাদেশের জাম্বিয়াতে এ রোগ দেখা দেয়। ১৯৪৩ থেকে ১৯৪৫ সালের মধ্যে মহাদেশের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। তবে এখন পর্যন্ত এর কোনো প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি। মশা-মাছি বাহিত রোগটি মূলত মশার মধ্যমেই বেশি ছড়ায়। আক্রান্ত গরু সুস্থ হতে দীর্ঘদিন সময় লাগে। দিন দিন গরু-বাছুর দুর্বল হয়ে পড়ে। অনেক ক্ষেত্রে মারাও যায়। একটি খামারকে অর্থনৈতিকভাবে ধসিয়ে দিতে খুরা রোগের চেয়েও অনেক বেশি ভয়ঙ্কর রোগ এটি।বাংলাদেশে গরুর লাম্পি স্কিন ডিজিজ প্রথম দেখা দেয় ২০১৯ সালে চট্টগ্রামে।রোগের কারণ: মূলত এটি একটি পক্স ভাইরাস বা লাম্পিং স্কিন ডিজিজ ভাইরাসজনিত রোগ। ভাইরাসটি Poxviridae পরিবারের অন্তর্ভুক্ত Capripox virus গণের ভাইরাস। ছাগল ও ভেড়ার পক্স ভাইরাসের সাথে এ ভাইরাসের খুবই সাদৃশ্য পাওয়া যায়। এ ভাইরাস গরু ছাড়া মহিষেও ছড়াতে পারে। এক গরু থেকে আরেক গরুতে ছড়িয়ে পড়ে। ছাগল ও ভেড়ায় প্রতিলিপি তৈরি করলেও এরা সাধারণত লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হয় না। এ ছাড়াও এ ভাইরাস মানুষকে আক্রমণ করে না। আক্রান্তের সময়: রোগটি প্রধানত বর্ষার শেষে, শরতের শুরুতে বা বসন্তের শুরুতে মশা-মাছির বেশি বিস্তারের সময় ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায়। রোগের লক্ষণ: এলএসডি আক্রান্ত গরু প্রথমে জ্বরে আক্রান্ত হয় এবং খাবার রুচি কমে যায়। জ্বরের সাথে সাথে নাক-মুখ দিয়ে লালা বের হয়, পা ফুলে যায়, দুই পায়ের মাঝে পানি জমে যায়। পশুর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় চামড়া পিন্ড আকৃতি ধারণ করে, লোম উঠে যায় এবং ক্ষত সৃষ্টি হয়। আর এ ক্ষত শরীরের অন্যান্য জায়গায় দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ক্ষতস্থান থেকে রক্তপাত হতে পারে। শরীরের কোথাও কোথাও ফুলে যায়। যা ফেটে টুকরা মাংসের মত বের হয়ে ক্ষত হয় এবং পুঁজ কষাণি বের হয়। পাকস্থলী বা মুখের ভেতরে সৃষ্ট ক্ষতের কারণে গরুর পানি পানে অনীহা তৈরি হয় এবং খাদ্য গ্রহণ কমে যায়। যেভাবে ছড়ায়: এ রোগে আক্রান্ত গরু থেকে বিভিন্ন উপায়ে অন্য গরুতে ছড়িয়ে পড়ে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য মাধ্যম হলো মশা ও মাছির আক্রমণ। মশা ও মাছিকে এ ভাইরাসের প্রধান বাহক হিসেবে দায়ী করা হয়। অন্যান্য কীট-পতঙ্গের মাধ্যমেও ভাইরাসটি ছড়াতে পারে। আক্রান্ত গরুর লালা গরুর খাবারের মাধ্যমে এবং খামার পরিচর্যাকারী ব্যক্তির কাপড়ের মাধ্যমে এক গরু থেকে অন্য গরুতে ছড়াতে পারে। আক্রান্ত গাভির দুধেও এ ভাইরাস বিদ্যমান। তাই আক্রান্ত গাভির দুধ খেয়ে বাছুর আক্রান্ত হতে পারে। গ্রাম-গঞ্জের প্রাণি চিকিৎসকগণ এক সিরিঞ্জ ব্যবহার করে বিভিন্ন গরু-ছাগলকে টিকা দেয়। এতেও সিরিঞ্জের মাধ্যমে এক গরু থেকে অন্য গরুতে ছড়িয়ে পড়ে। ভাইরাসে আক্রান্ত ষাঁড়ের সিমেন প্রজননে ব্যবহার করলেও এ রোগ ছড়িয়ে পড়ে। শুধু গরু, মহিষ ও ছাগল এ ভাইরাসে