চিরন বিকাশ দেওয়ান,রাঙামাটি প্রতিনিধি: 

নানান আয়োজন আন্তজাতিক আদিবাসী দিবস উদযাপন উপলক্ষে রাঙামাটি আদিবাসী ফোরামের সভাপতির উর্দ্দেগে সাবেক উপসচিব প্রকৃতি রঞ্জন চাকমা সভাপতিত্বে, উপস্থিত ছিলেন প্রধান অতিথি, সাবেক ২৯৯ নং রাঙামাটি সাংসদ উষাতন তালুকদার এম পি,বিশেষ অতিথি পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ সদস্য চঞ্চু চাকমা, সি এইচ টি হেডম্যান নেটওয়ার্ক সহসভাপতি এডভোকেট ভোবতোষ দেওয়ান, ইন্দু বৌদ্ধ হিষ্টান এক্য পরিষদ সহসভাপতি তপন কান্তি বড়ুয়া,এম এন লারমা মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন সভাপতি বিজঢ কেতন চাকমা,বাংলাদেশের কমিষ্টনিস্ট পাটির রাঙামাটি জেলা সভাপতি সমির কান্তি দে,বিলাই ছড়ি উপজেলার সাবেক মহিলা ভাইয়েস শ্যামা চাকমা, আজ ৯ আগস্ট ২০২৩ আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস,১৯৯৪ সালের ২৩ ডিসেম্বর জাতি সংঘের সাধারণ পরিষদ ৪৯/২১৪ ধারা অনুযায়ী প্রতি বছরে ৯ আগস্টকে আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস হিসেবে পালনের ঘোষণা দেয়।এই দিবসের মূল লক্ষ্য হলো, জাতিসংঘের সদস্যরাষ্ট্র সমূহ, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা, নাগিরিক সমাজ,মিডিয়া সহ সংশ্লিষ্ট সকলে যেন আদিবাসীদের অধিকার সম্পর্কে অধিকতর সচেতন হন এবং আদিবাসীদের অধিকার প্রতিষ্টায় এগিয়ে আসেন।অন্যান্য যে কোনো সময়ের তুলনায় বাংলাদেশের ৪০ লক্ষাধিক আদিবাসী জনগন এখন এক কঠিন সংকট ও অনিশ্চিতার মধ্যে দিন কাটাতে বাধ্য হচ্ছে। আদিবাসী দের ঐতিহ্যগত ও প্রথাগত ভূমি থেকে ক্রমাগত তারা উচ্ছেদের মুখোমুখি হচ্ছে। ভূমি, বন,ও প্রাকৃতিক সম্পদের চিরায়ত অধিকার থেকে আদিবাসী জনগোষ্ঠীরা বঞ্চিত হচ্ছে। আদিবাসী দের আত্ম-পরিচয় ও আত্না নিয়ন্ত্রণের অধিকার হলো মানবাধিকার। জাতি সংঘ এ বছরের থিম নির্ধারন করেছে,, আত্ম-নিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্টার সংগ্রামে আদিবাসী তরুনরাই মূল শক্তি। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তনীও গুতেরেস তারঁ বানীতে বলেছেন, আমরা আদিবাসী তরুনদের পরিবর্তন আনায়ন এবং ভবিষ্যৎ নির্মানের অবদানকে স্বীকৃতি দেই এবং উদযাপন করি।বিশ্ব জুড়ে আদিবাসী জনগন কঠিন চ্যালেজ্ঞ মোকাবিলা করছে,তাদের ভূমি ও সম্পদের অধিকার হুমকির মুখে পতিত,তাদের অধিকার অবদমিত এবং তারা ক্রমাগতবিপন্নতা, প্রান্তিকতা ও বন্ধনার শিকার।তবে আদিবাসী তরুনরা অধিকার ফিরে পাবার সংগ্রাম করছে,বৈশ্বিক জলবায়ু কর্মসুচী আন্দোলনের তারা নেতৃত্ব দিচ্ছে। তরুনরা ন্যায়্যতা ও সাম্যের জন্য এডভোকেসী করছে।তারা নিজস্ব সংস্কৃতি সংরক্ষণ ও উদযাপন, মানবাধিকারকে এগিয়ে নেয়া এবং আদিবাসী ইতিহাস ও ইস্যু সম্পর্কে বিশ্ব ব্যাপী সচেতনতা সৃষ্টির কাজ করছে।এই কঠিন সংকটের মধ্যেও দেশের আদিবাসী জনগন অধিকার প্রতিষ্টার সংগ্রামে অবিচল আছে।আদিবাসী দিবসে তরুন সমাজ নব চেতনায় উদ্ধুদ্ধ হয়ে সক্রিয় আন্দোলনে অধিকতর এগিয়ে আসছে।আজ আদিবাসী দিবসে আমরা দেশের গনতান্ত্রিক, প্রগতিশীল ও অসাম্প্রদায়িক শক্তিকে আদিবাসীদের পাশে দাড়ানোর আহ্বান জানাই।এবার আদিবাসী দিবসে উপস্থিত বক্তৃতারা ১২ টি উপস্থাপন সম্মিলিত দাবী করে লিখিত বক্তব্য দেন( ১)আত্না-নিয়ন্ত্রণ অধিকারসহ আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে হবে(,২)আদিবাসীদের রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক ও ভূমির অধিকার নিশ্চিত করতে হবে,(৩)আদিবাসী তরুন সমাজের নেতৃত্ব বিকাশ, প্রশিক্ষন,শিক্ষা, উন্নয়ন ও অগ্রগতির জন্য বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহন করতে হবে,(৪)আদিবাসী ইস্যুতে অন্যান্য দেশের মতে সরকার জাতিসংঘ ও আদিবাসী জনগন -এই ত্রিপক্ষীয় সংলাপের জন্য উৎসাহ ও প্রণোদনা দিতে হবে,(৫)পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে,এ লক্ষ্যে সময় সুচী ভিক্তিক রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে(,৬)সমতল অঞ্চলের আদিবাসীদের জন্য পৃথক মন্ত্রনালয় ও ভূমি কমিশন গঠন করতে হবে,(৭)আদিবাসীদের ভূমিতে তাদের স্বাধীন সম্মার্ত ছাড়া ইকোপার্ক, সামাজিক বনায়ন, ট্যুরিজম, ইপিজেড বা অন্য কোনো প্রকল্প গ্রহন করা চলবে না।(৮)আদিবাসীদের উপর সকল নিপীড়ন, নির্যাতন ও হয়রানি বন্ধ করাসহ সকল মিত্যা মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে, (৯)জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ২০০৭ সালে গৃহীত আদিবাসী বিষয়ক ঘোষণা পত্র ও আই এলও ১৬৯ নং কনভেনশন অনুসমর্থন ও আই এলও কনভেনশন ১০৭ বাস্তবায়ন করতে হবে।(১০)জাতীয় সংসদে আদিবাসীদের জন্য বিশেষ কোটা সংরক্ষণ বা আসন বরাদ্দ রাখতে হবে।(১১)সরকারি প্রথম শ্রেণীতে পূবের মতো আদিবাসী কোটা সংরক্ষণ করতে হবে এবং অন্যান্য চাকুরীসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্টানে ভর্তি কোটা যথাযথ বাস্তবায়ন করতে হবে।(১২)রাষ্ট্রীয় ভাবে আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস উদযাপন করতে হবে।অনুষ্টান শেষে স্থান ঃ রাঙামাটি পৌর সভা হইতে শত শত নারী পুরুষ সংস্কৃতির লোকগীতি গান পেষ্টুন ব্যানার সহকারে এইর্্যালীতে অংশ নেন,র্্যালিটি পৌরসভা থেকে বের হয়ে প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে শিল্পকলা একাডেমি গিয়ে সমাপ্ত হয়।