মোঃআজগর আলি,নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
সততা ও নৈতিকতা ছাড়া জীবনে সফলতা পাওয়া যায়না উল্লেখ করে বিদায়ী প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেছেন, ১৯৭১ সাল আমাদের গৌরবের। একাত্তরের চেতনাকে আমাদের মনে-প্রাণে ধারণ করতে হবে। প্রধান বিচারপতি ৫ই সেপ্টেম্বর বুধবার দুপুরে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের ৬ তলা ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় এ সব কথা বলেন। সাতক্ষীরা সরকারি কলেজ থেকে বিএসসি পাস করা প্রধান বিচারপতি ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে আরও বলেন, একাত্তরের চেতনাকে ধারণ করতে না পারলে, ত্রিশ লক্ষ শহীদের সাথে বেইমানি করা হবে। আমরা যদি আমাদের দেশকে উন্নত করতে পারি, তবে আমাদের অন্যদেশে কাজ করতে যেতে হবে না।
প্রধান বিচারপতি তার ছাত্র জীবনের স্মৃতিচারণ করে বলেন, যদি কেউ আমাকে প্রশ্ন করে জীবনের সবচেয়ে ভালো দিনগুলো কোথায় কাটিয়েছি, জবাবে বলব সাতক্ষীরায়। সাতক্ষীরায় কাটানো দুইবছর জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় ছিল।
প্রধান বিচারপতি শৈশবের স্মৃতিচারণ করে বলেন, প্রধান বিচারপতি একদিনের হইনি, এর পেছনে অনেকের অবদান রয়েছে। তাদের মধ্যে উল্লেখ্য অবদান রয়েছে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের শিক্ষকদের। বাবা মা আমাদের জন্ম দিয়েছেন, তবে শিক্ষকদের অবদান আমাদের জীবনে অনস্বীকার্য। এই প্রতিষ্ঠানের সকল শিক্ষকদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা অমলিন হয়ে থাকবে চিরকাল। স্মৃতি চারণে প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, ১৯৭৪ সালে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী ছিলাম আমি। সে সময়ে ক্লাসের ফাঁকে কলেজের লেকে যেয়ে বসে থাকা। বরই খেতে খেতে বন্ধুদের সাথে গল্প করা এগুলো সবই ছিল জীবনের রঙিন ইতিহাস। সাতক্ষীরা আমার জন্মস্থান না হলেও জীবনের রঙিন সময়গুলো এখানে কাটিয়েছি।
সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আমানুল্লাহ আব্দুল হাদীর সভাপতিত্বে এসময় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সদর আসনের সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবি, জেলা ও দায়রা জজ চাঁদ মোহাম্মদ আব্দুল আলিম আল রাজী, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির, পুলিশ সুপার কাজী মনিরুজ্জামান প্রমুখ।
এর আগে বেলা সাড়ে ১১টায় প্রধান বিচারপতি সাতক্ষীরা জেলা জজ আদালত প্রাঙ্গণে বিচারপ্রার্থীদের জন্য নির্মিতব্য বিশ্রামাগার ন্যায়কুঞ্জের কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন করেন। সকালে সাতক্ষীরা সার্কিট হাউজে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে অভিভাষণ প্রদান করবেন।
মাননীয় প্রধান বিচারপতির এই সংক্ষিপ্ত সফরে সুপ্রিম কোটের হাইকোট বিভাগের রেজিস্ট্রার মুন্সি মো. মশিয়ার রহমান এবং আপিল বিভাগের রেজিস্টার মোহম্মদ সাইফুর রহমান সফর সঙ্গী হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
উল্লেখ্য, গত ৩১ আগস্ট ২০২৩ প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর শেষ কর্মদিবস ছিল। আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর তিনি অবসরে যাবেন।