নুর হোসেন- চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধিঃ
বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুবুর রহমান শামীম দুর্নীতি দমন কমিশনকে বিএনপি দমন কমিশন বলে অবহিত করে বলেন, এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে নজিরবিহীন দ্রুততম সময়ে। রাতের অন্ধকারে সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে। সাক্ষ্যগ্রহণের সময় এবং রায়ের দিনও আমাদের আইনজীবীদের এজলাসে ঢুকতে দেয়া হয়নি। সরকারের নীলনকশা অনুযায়ী আদালত ফরমায়েশি রায় দিয়েছে।তিনি আরও বলেন, দুর্নীত দমন কমিশন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে সরাসরি নিয়ন্ত্রিত। যে কারণে মানুষ বিশ্বাস করে, দুর্নীত দমন কমিশন হচ্ছে বিএনপি দমন কমিশন। বর্তমান ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে সারা দেশেলাখো- কোটি মানুষ এক এবং ঐক্যবদ্ধ, আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্যায়ে যখন আমরা উপনীত, ঠিক তখনই রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে এ মামলাটির ফরমায়েশী রায় ঘোষণা করা হয়েছে। সরকারের নীলনকশার এই আজ্ঞাবহ রায় জনগণ মেনে নেবে না ।তিনি আজ ৩ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) বিকালে নূর আহমদ সড়কে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমান এবং তাঁর সহধর্মিনী ডাঃ জুবায়দা রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার ফরমায়েশী রায়ের প্রতিবাদে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম মহানগর যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের যৌথ উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিলপূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের সভাপতি মোশাররফ হোসেন দীপ্তি’র সভাপতিত্বে ও চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এইচএম রাশেদ খানের সঞ্চালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাসেম বক্কর বলেন, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে দেয়া এবং নির্বাচন থেকে দূরে সরিয়ে দিতেই তারেক রহমান ও জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে সরকারের নীলনকশার ফরমায়েশি রায় দেয়া হয়েছে । আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, শেখ হাসিনার পতন না হওয়া পর্যন্ত আইনের শাসন কায়েম হবে না। জনগণ রাস্তায় নেমেছে, এই ফ্যাসিজমের পতন না ঘটিয়ে আমরা ঘরে ফিরে যাবো না।বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান বলেন, এই সরকার দীর্ঘদিন অবৈধভাবে ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে রাষ্ট্রের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছে। রাষ্ট্রের অন্যতম স্তম্ভ বিচার বিভাগ তার মধ্যে অন্যতম। যার প্রমাণ দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা ও বানোয়াট মামলায় সাজা দিয়ে কারান্তরীণ করে রাখা হয়েছে। নজীরবিহীনভাবে নিম্ন আদালতের সাজা উচ্চ আদালত কর্তৃক বৃদ্ধি করা হয়েছে। বিগত ১৪ বছরে সারাদেশে মিথ্যা ও গায়েবি মামলায় প্রায় ৪০ লাখ মানুষকে আসামি করা হয়েছে। হাজার হাজার নেতাকর্মীদের সাজা প্রদান করা হয়েছে।সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের সভাপতি মোশাররফ হোসেন দীপ্তি বলেন, সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমার তারিখ ১০১ বার পেছানো হয়েছে। রিজার্ভ চুরির তদন্ত প্রতিবেদন জমার তারিখ ৭৩বার পেছানো হয়েছে। এসব জনগুরুত্বপূর্ণ মামলা বছরের পর বছর ঝুলে আছে। কিন্তু জনাব তারেক রহমান ও ডা. জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা ঘটনার ভূয়া মামলার রায় মাত্র ১ মাস ২০ দিনে প্রদান করা হয়েছে। এটা দিয়ে প্রমাণিত হয় যে, এই রায়ে সরকার আদালতের মাধ্যমে তাদের হীন স্বার্থ চরিতার্থ করছে। এই ধরনের রায় দিয়ে চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে স্তব্ধ করা যাবে না। জনগণ তাদের অধিকার অবশ্যই আদায় করবে।বিশেষ অতিথির বক্তব্যে যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহ সভাপতি ও মহানগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ শাহেদ বলেন, এই রায় সরকারের নির্দেশ মোতাবেক হয়েছে। আদালতে প্রায় ৪৯ লাখ মামলার জট থাকলেও গভীর রাত পর্যন্ত একতরফাভাবে সাজানো সাক্ষীকে দিয়ে শেখানো বুলি বলানো হয়েছে আদালতে। আমাদের আইনজীবীদের এজলাস থেকে বের করে দিয়ে তামাশার বিচারের নামে ক্যামেরা ট্রায়াল চালানো হয়েছে। এই ফরমায়েশি রায় জনগণ মেনে নেবে না। অবিলম্বে মিথ্যা মামলায় সাজা প্রত্যাহারের আহ্বান জানাচ্ছি।সমাবেশের সঞ্চালক চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এইচএম রাশেদ খান বলেন, জনগণের যে জাগরণ সৃষ্টি হয়েছে বিএনপি’র একদফার আন্দোলনে, সেটাকে নস্যাৎ করতে এই সাজানো রায় দেয়া হয়েছে। এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে আদালতকে দলীয়করণ করে জিয়া পরিবারকে রাজনীতি থেকে নির্মূল করতে প্রতিটি রায় ফরমায়েশি দেয়া হচ্ছে। তারেক রহমান ও তার সহধর্মিণী ডা. জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে এই সাজানো মিথ্যা মামলার ফরমায়েশি রায় দিয়ে জিয়া পরিবারকে রাজনীতি থেকে নির্মূল করা যাবে না। দেশনায়ক তারেক রহমানের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে যে গণজাগরণ সৃষ্টি হয়েছে এই অবৈধ সরকারের পতন এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের আহবায়ক মোহাম্মদ সাইফুল আলম, সদস্য সচিব শরিফুল ইসলাম তুহিন, চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক আলী মূর্তজা খানসহ যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল নূর আহমদ সড়ক থেকে শুরু হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে তিনপোলের মাথায় শেষ হয়।