মোঃ আজগার আলী, জেলা প্রতিনিধি সাতক্ষীরাঃ

যুদ্ধাপরাধ মামলায় মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামী সাতক্ষীরার জামায়াত নেতা মাওলানা আব্দুল খালেক মন্ডল চিকিৎসাধীন অবস্থায় খুলনা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে মৃত্যুবরন করেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন )। বৃহস্পতিবার ২০শে জুলাই বিকাল ৫টা ৪৫ মিনিটে তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯২ বছর। আব্দুল খালেক মন্ডলের ছোট ছেলে ফারুক মন্ডল মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।আব্দুল খালেক মন্ডল সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বৈকারি ইউনিয়নের খলিলনগর গ্রামের চাঁদ মন্ডলের ছেলে। তিনি ১৯৮৮ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত বৈকারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন। ১৯৯০ সালে তিনি সাতক্ষীরা সদর উপজেলার চেয়ারম্যান ছিলেন। এ ছাড়াও ২০০১ সালে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী হিসাবে ৮ম সংসদ নির্বাচনে তিনি সাতক্ষীরা-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সংসদ সদস্য থাকা অবস্থায় আব্দুল খালেক মন্ডল সাতক্ষীরার আগরদাড়ী কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন।খালেক মন্ডলের ছোট ছেলে ফারুক মন্ডল জানান, গত ৮ই জুলাই শনিবার তিনি বার্ধক্যজনিত কারনে সাতক্ষীরা কেন্দ্রীয় কারাগারে থাকা অবস্থায় অসুস্থ হয়ে পড়লে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর পরদিন সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজে নেওয়া হলে তার অবস্থার অবনতি হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার বিকালে তিনি মারা যান। উল্লেখ্য, আব্দুল খালেক মন্ডলের বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ২০১৫ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করা হয়। এতে ৬টি অভিযোগ উপস্থাপন করা হয়। একই বছরের ৮ই ফেব্রুয়ারী রোববার তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।এরপর ২০১৭ সালের ৮ই ফেব্রুয়ারী চুড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে ট্রাইব্যুনালের তদন্তকারী সংস্থা। প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৭১ সালে সাতক্ষীরা মহকুমায় রাজাকার বাহিনীর প্রধান সংগঠন ছিলেন আব্দুল খালেক মন্ডল। তখন পাকিস্তানি বাহিনীর সাথে যোগসাজশে অসংখ্য নিরস্ত্র ও নিরীহ মানুষকে হত্যা করা ছাড়াও নৃশংসতা চালান তিনি। ২০১৮ সালের ৫ই মার্চ তারিখে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। এরপর ২০২২ সালের ২৪শে মার্চ খুন, ধর্ষন ও অপহরন সহ ৬টি অভিযোগের সত্যতা প্রমানিত হওয়ায় তাকে মৃত্যুদন্ডের রায় দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারপতি মোঃ শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চ। এই রায়ের বিরুদ্ধে খালাস চেয়ে আপিল’ও করেন তিনি।