মোঃ সাদেকুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধিঃ

দেশের বৃহৎ জলাভূমি চলনবিলে চলছে মাছ ধরার মৌসুম। সুতিজাল, বেড়জালসহ বিভিন্নভাবে মাছ ধরছেন জেলেরা। এদিকে বিলের পাশে বসানো হয়েছে শুঁটকির অস্থায়ী চাতাল। সেই চাতালে বিভিন্ন মাছ শুকিয়ে তৈরি করা হচ্ছে শুঁটকি।
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় চলনবিলের পাশজুড়ে এসব চাতাল দেখা যায়। ওই অঞ্চলে গেলেই প্রথমে নাকে লাগবে শুঁটকির গন্ধ। জানা গেছে, এসব শুঁটকি দেশের চাহিদা মিটিয়ে যাচ্ছে বিদেশেও।

 

উল্লাপাড়া উপজেলার আড়ুয়া পাঙ্গাসী গ্রামের শুঁটকি ব্যবসায়ী লোকমান হোসেন বলেন , চলনবিলের শুঁটকি যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, বাহরাইন, কাতার, দুবাইসহ ১০-১২টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে।

একই গ্রামের শুঁটকি ব্যবসায়ী আকবর আলী বলেন, মাছ ধরার মৌসুমে চলনবিলের বিভিন্ন এলাকায় অস্থায়ী চাতাল বসে। এসব চাতালে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ শুকিয়ে শুঁটকি তৈরি করা হয়।

ব্যবসায়ীরা আরও জানান, মানভেদে এসব শুঁটকি কয়েকটি ভাগে বাছাই করা হয়। এরমধ্যে সবচেয়ে ভালো মানের শুঁটকিগুলো রপ্তানি হয়। মূলত ঢাকার ব্যবসায়ীদের হাত ঘুরেই এখানকার শুঁটকি বিদেশে যায়। এছাড়া এখানকার শুঁটকি বিক্রি হচ্ছে ঢাকা, সৈয়দপুর ও তিস্তা অঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায়।

 

চলনবিলের শুঁটকির মান ও আকাভেদে দামও ভিন্ন। ছোট আকারের এক মন শুঁটকির দাম ১০-২২ হাজার এবং বড় আকারের শুঁটকির দাম ২০-৩০ হাজার টাকা।

শুঁটকি ব্যবসায়ী মানিক বলেন , গত বছর আমার চাতালে প্রায় ২০০ মণ শুঁটকি উৎপাদন হয়েছিল। এবার আরও বেশি শুঁটকি তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে।

আমজাদ আলী জানান, আশ্বিন থেকে অগ্রহায়ণ মাস পর্যন্ত এখানে শুঁটকি তৈরি হয়। প্রতি মণ তাজা মাছ থেকে ১৫ কেজি শুঁটকি পাওয়া যায়। এভাবে প্রায় তিন মণ তাজা মাছ শুকালে এক মণ শুঁটকি হয়।

আমজাদ আলী আরও বলেন, শুঁটকি ব্যবসায় যেমন লাভ আছে, তেমন লোকসানও আছে। ভালোভাবে মাছ শুকানো না হলে শুঁটকি নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তবে ভালো মানের শুঁটকির কদর বেশি। বড় ব্যবসায়ীরা এগুলো কিনে বিদেশে বিক্রি করেন।