মোঃ সাদেকুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধিঃ
আধুনিক যন্ত্রপাতির অভাব ও নানা সংকটে ধ্বংস হতে বসেছে বহুল আলোচিত সিরাজগঞ্জ সরকারি মুরগি প্রজনন ও উন্নয়ন খামার। পুষ্টির অভাবে মিটানো জেলা ও প্রান্তীক খামারীদের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা সৃষ্টিতে প্রতিষ্ঠানটি তৈরী করে সরকার।
বর্তমানে নানা সংকটের মুখে সেবা ও উৎপাদনমুখী এই প্রতিষ্ঠানটি পুরানো জরাজীর্ন শেড, মুরগীর পানি ও খাবারের পাত্রসহ জনবল সংকটে ধুঁকছে এই প্রতিষ্ঠানটি।
দৈনিক সংবাদ চিত্রকে ফিরোজ নামের এক খামারী বলেন, এই খামার ঘিরে এলাকাজুড়ে ছোট বড় অসংখ্য খামার গড়ে উঠেছিলো।কিন্তু সঠিক পরিকল্পনা ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির অভাবে খামারে বাচ্চা ও ডিম উৎপাদন কমে গেছে। যার ফলে এই অঞ্চলে বাচ্চা দাম বেড়ে গেছে, খামারি সংখ্যাও কমে গেছে।এক সময় এ এলাকার মানুষের আমিষের ঘাটতি পূরন হতো।জানা যায়, সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার শিয়ালকোলে ১৯৮২ সালে ৩ একর জমি ওপর সরকারি মুরগির প্রজনন ও উন্নয়ন খামারটি গড়ে তোলা হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ অঞ্চলের খামারিদের উন্নত জাতের বাচ্চা সরবরাহ করে আসছিল এই প্রতিষ্ঠানটি। তবে বিপুল সম্ভাবনা থাকলেও দীর্ঘদিনের অব্যবস্থাপনা ও কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে খামারটির কার্যক্রম এখন স্থবির হয়ে পড়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, খামারে ৮টি শেডের মধ্যে ৪টি পরিত্যাক্ত অবস্থায় আছে। বাকিগুলো ভবনের দেয়ালে ফাটল ধরেছে। টিনের চালগুলো মরিচা পড়ে ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে। দেখা মেলেনি আধুনিক ব্রুডার হাউজ।
বর্তমানে খামারে ৯শ থেকে ১ হাজার মুরগি পালন করা হচ্ছে। এক সময় প্রত্যেক শেডেই বিভিন্ন বয়সী মুরগি পালন করা হতো। ডিম ও বাচ্চা বিক্রি করা হতো। নানা অনিয়মের কারনে খামারটির এখন বেহাল দশা। পর্যাপ্ত ডিম উৎপাদন না হওয়ার কারণে ১ বছর ধরে বাচ্চা উৎপাদন করা হচ্ছে না। অকেজো হয়ে পড়ে আছে ৬৪ হাজার বাচ্চা উৎপাদন সক্ষম হ্যাচারী হাউজ ।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, বছরে ৫- ৬ লাখ ডিম উৎপাদন করা হতো । দুই থেকে আড়াই লাখ বাচ্চা উৎপাদন করে পার্শ্ববতী খামার গুলোতে বাচ্চা সরবরাহ করা হতো। এ খামারে বাচ্চা পালন করা হতো ১৭ থেকে ১৮ হাজার। অথচ সেই খামারে মুরগি আছে বর্তমানে ৯’শ যার ডিম উৎপাদন হচ্ছে ৪’শ। খামারে ৬৪ হাজার করে বাচ্চা উৎপাদনের হ্যাচারীটি বন্ধ আছে ১ বছর ধরে। এর ফলে পার্শ্ববতী বেসরকারি খামার গুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ মুরগি খামারের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপক ডাক্তার হাবিবুর রহমান বলেন, আমি নতুন এসেছি, এক সময়ে এই প্রতিষ্ঠান লাভজনক ছিল। বর্তমানে সিরাজগঞ্জ সরকারি মুরগি খামার নানা সমস্যার মধ্যে রয়েছে। প্রতিটি শেড পুরনো হয়ে গেছে, ফলে বৃষ্টি পানি পড়ছে। ভবনগুলোর বেহাল অবস্থা। আমি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করছি।