প্রতারণার ফাঁদে ফেঁসে গেলো কুয়েত প্রবাসী এক বাংলাদেশী।

মোঃ মাহ্ফুজুল হক খান (জিকু),সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টারঃ

কিশোরগঞ্জের মিঠামইনের চমকপুর গ্রামের বাসিন্দা শেখ হারুন পেশায় একজন কুয়েত প্রবাসী। দীর্ঘদিনের প্রবাস জীবন তার। নিজের পরিবারের উন্নতি যেমন ঘটিয়েছেন তেমনি রেমিটেন্স যোদ্ধা হিসেবে তার অবদান কম নয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় প্রবাসী শেখ হারুনের গ্রামের আর এক বাসিন্দা প্রতারক মো. রিপন তাকে তার ব্যবসার পার্টনার হওয়ার জন্য প্রস্তাব দেয়৷ জানান ঢাকার তুরাগ উপজেলার ধউর নিশাত নগরে ইউরোম্যাক্স টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড নামে তার একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। প্রবাসী হারুন কে প্রস্তাব দেন নতুন একটি সোয়েটার ফ্যাক্টরি নির্মাণ করবে এবং ৫০ শতাংশ ব্যবসায়িক পার্টনার হওয়ার। এই মোতাবেক দুজনের মধ্যে একটি ব্যবসায়িক চুক্তি হয় এবং শেখ হারুন ৫৮ লক্ষ টাকা রিপনকে দেয়। কিছুদিন পর শেখ হারুন ফেরত জান কুয়েতে।
এদিকে চুক্তি অনুযায়ী যে লভ্যাংশ পাওয়ার কথা তা দিচ্ছিলেন না প্রতারক রিপন। প্রবাসী হারুন জানতে পারেন প্রতারক রিপন কোন ফ্যাক্টরি নির্মাণ করেনি। পরবর্তীতে অংশীদার হিসেবে দেয়া ৫৮ লক্ষ টাকা ফেরত চান প্রতারক রিপনের কাছে কিন্তু আসামি রিপন টাকা ফেরত না দিয়ে তাল বাহানা শুরু করে। পরে অনেক ঘুরিয়ে প্রতারক রিপন বিগত ২০২৩ সালের মে মাসের ১৮ তারিখে ৪০ লক্ষ টাকার দুটি চেক প্রদান করে এবং মে মাসের ২৫ তারিখে ১৮ লক্ষ টাকার আরেকটি চেক প্রদান করে। পরবর্তীতে ২০২৩ সালের জুনের ২৫ তারিখে এ চেকগুলো অগ্রণী ব্যাংকে নগদায়ন করতে গেলে রিপনের অ্যাকাউন্টে টাকা না থাকায় চেক গুলো ডিজঅনার হয়।
পরে প্রবাসী শেখ হারুন আইনের দারস্থ হন। এ বিষয়ে ২০২৩ সালের জুলাইয়ের ২৪ তারিখে এনআইঅ্যাক্ট ১৩৮ধারা মোতাবেক বিজ্ঞ আদালতে মামলা দায়ের করেন যার মামলা নম্বর ৫৩২/২০২৪। এ মামলায় ২০২৫ সালের জানুয়ারির ১৬ তারিখে বিজ্ঞ আদালত রায় ঘোষণা করেন। যাতে উল্লেখ করা হয় এনআইঅ্যাক্ট ১৩৮ ধারার অভিযোগ সাক্ষ্যপ্রমাণ দ্বারা সন্দেহাতীত প্রমাণিত হওয়ায় মো. রিপনকে উক্ত ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে এক বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৫৮ লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরো তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।

বর্তমানে প্রতারক রিপন পলাতক রয়েছে। এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদের তথ্য মতে জানা যায় রিপন শুধু কুয়েত প্রবাসী শেখ হারুনের সাথেই নয় এমন প্রতারণা আরো অনেকের সাথে করেছে বলে সত্যতা পাওয়া যায়।