ইয়াছমিন মুন্নী,কক্সবাজার প্রতিনিধিঃ

রামু, ১৬ মে, ২০২৪: স্থায়ীত্বশীল উন্নয়নের জন্য সংগঠন ইপসা’র আয়োজনে আজ রামু উপজেলা অফিসার্স ক্লাব মিলনায়তনে “Resilient Homestead and Livelihood Support to the Vulnerable Coastal People of Bangladesh (RHL)” প্রকল্প সম্পর্কে একটি প্রকল্প অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই প্রকল্পটি জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকির মুখোমুখি উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর জীবন ও জীবিকা উন্নত করার জন্য জিএসসিএফ-এর অর্থায়নে এবং পিকেএসএফ-এর সহযোগিতায় বাস্তবায়িত হবে। আরএইচএল প্রকল্পটি বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে বসবাসকারী সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর জীবন ও সম্পদের ঝুঁকি হ্রাস করতে এবং চরম জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় তাদের উন্নত ও টেকসই জীবিকার উপায় প্রদান করার লক্ষ্যে রামু উপজেলায় বাস্তবায়িত হবে।মোহাম্মদ হারুন, ফোকাল পারসন- ইপসা কক্সবাজার এর সঞ্চালনায় অবহিতকরণ সভায় সভাপতিত্ব করেন ইপসা’র প্রধান নির্বাহী মো: আরিফুর রহমান এবং প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: রাশেদুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন ইপসা রোহিঙ্গা রেসপন্স কর্মসূচির প্রধান মোহাম্মাদ শহীদুল ইসলাম। উক্ত অবহিতকরণ সভায় মূল প্রবন্ধ ও প্রকল্প পরিচিতি উপস্থাপন করেন ইপসা’র পরিচালক মোহাম্মদ শাহ্জাহান। তিনি বলেন, এ প্রকল্পের আওতায় জলবায়ু পরিবর্তন সহনশীল বাড়ি নির্মাণ/পুনঃনির্মাণ/বসতভিটা উঁচু করণ করা হবে; কাঁকড়া হ্যাচারি/নার্সারি স্থাপন করা হবে এবং জলবায়ু পরিবর্তন সহনশীল কাঁকড়া চাষ করা হবে; মাচা পদ্ধতিতে ছাগল/ভেড়া পালন করা হবে; বসতবাড়ীর আঙিনায় লবণাক্ততা সহনশীল সবজি চাষ করা হবে এবং বাড়ির আঙিনায় গাছ রোপণ এবং কাঁকড়া ঘেরে ম্যানগ্রোভ বনায়ন করা হবে। এই প্রকল্পটি সাতটি উপকূলীয় জেলার (কক্সবাজার, ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট ও খুলনা) আনুমানিক ৩৬২,৪৭৫ জন লোককে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে উপকৃত করবে।প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: রাশেদুল ইসলাম বলেন, এই প্রকল্পের মাধ্যমে গরিব ও অসহায় মানুষদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করা সম্ভব। এ প্রকল্পটি জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবেলায় সরকারি পরিকল্পনা ও নীতিমালার সাথে খুবই সামঞ্জস্যপূর্ণ। উপজেলা প্রশাসন ও প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সকল সরকারি বিভাগ থেকে এ প্রকল্পকে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করা হবে। ইপসা’র প্রধান নির্বাহী বলেন “আরএইচএল প্রকল্পটি উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে এবং তাদের জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতি আরও প্রতিরোধী করে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আমরা এই প্রকল্পটি সফলভাবে বাস্তবায়নের জন্য সরকার, স্থানীয় জনগোষ্ঠী এবং অন্যান্য সকলের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সুশান্ত দেবনাথ, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা; ফারুক হোসেন, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা; সাহাদাত করিম, উপজেলা পশুসম্পদ কর্মকর্তা; আল গালিব, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা; চেয়ারম্যান, ফতেখারকুল, রাজারকুল, খুনিয়া পালং, চাকমারকুল ইউনিয়ন সহ বিভিন্ন এনজিও প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।সভায় বক্তারা বলেন, আরএইচএল বিষয়ক প্রকল্পটি যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা হলে উপজেলার মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে। সভায় প্রকল্প ব্যবস্থাপক আরএইচএল প্রকল্প সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন। সভার শেষে প্রকল্প কর্মকর্তা সকলের প্রশ্নের উত্তর দেন এবং প্রকল্পের আওতায় ভবিষ্যতে কী কী কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য প্রদান করেন। সভা শেষে সভাপতি উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সভা সমাপ্তি ঘোষনা করেন।