মোঃ মোশারফ হোসেন,কাউনিয়া রংপুর প্রতিনিধিঃ

নবীজীর শিক্ষা করো না ভিক্ষা, এই মূল মন্ত্র কে সামনে রেখে অভারের সংসারে জন্ম নেয়া দুই চোখ অন্ধ আঃ হাকিম (১৪) ভিক্ষা না করে হাওয়াই মিঠাই, বুট-বাদাম বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছে,সেই সাথে অভাবের সংসারে সহযোগিতা হাতিয়ার সে।
স্বাভাবিক শিশুদের মতো জন্মগ্রহণ করলেও মাত্র ২বছর বয়সেই তার দুই চোখের শক্তি হারানো আঃ হাকিম। ধীরে ধীরে দৃষ্টি শক্তি কমতে থাকে তার দুই চোখের । অন্য শিশুদের দুরন্তপনা দেখে তার মনেও অনেক স্বপ্ন ছিল, বিধাতা তার দূষ্টি কেরে নিলো। কত ডাক্তার, কবিরাজ দিয়ে চিকিৎসা করেও কোনো উন্নতি হয়নি তার চোখের দৃষ্টির। সবশেষ কোনো উপায় না পেয়ে তাকে নিয়ে রংপুরের বড় বড় ডাক্তার কে দেখান। সেখানে চিকিৎসক তাকে জানান তার চোখের যে অবস্থা তার কোনো প্রতিষেধকই তাকে আর স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে পারবে না। তার পরেও সে থেমে নেই। অন্ধ হয়েও সমাজের বোঝা না হয়ে বরং তার প্রতিভা ব্যবসা করে এগিয়ে যেতে চায় এ সমাজে। উপজেলার হরিশ্বর গ্রামের রাজমিস্ত্রীর জোগালী হামিদুলের পুত্র আঃ হাকিম( ১৪)তারই যেনো এক উজ্জল দৃষ্টান্ত। দুই চোখ অন্ধ হয়েও ভিক্ষাবৃত্তি নয় বরং ফেরী করে আয় করে তার বাবার সংসারে সহযোগিতা করে আসছে। অন্ধ আঃ হাকিমের জীবন থেকে অনেকেরই শিক্ষা নেওয়া উচিত বলে মনে করছেন স্থানীয় সুধিসমাজ।

শিশু আঃ হাকিম নামেনি ভিক্ষাবৃত্তি পেশায় বরং কষ্ট করে ফেরী করে হাওয়াই মিঠাই, বুট বাদাম বিক্রি করে যে আয় হয় তাই দিয়ে সংসারে যোগান দেয়। কাউনিয়া থানা রোডে হাওয়াই মিঠাই বিক্রির সময় কথা হয় অন্ধ আঃ হাকিম এর সাথে। সে মৃধ কন্ঠে জানায় আমি ভিক্ষা করি না, হালাল পথে কামাই করে খাই। হালাল পথে ফেরী করে বুট-বাদাম- হাওয়াই মিঠাই বিক্রি করে মা-বাবাকে সহযোগিতা করি। আমার বড় ভাইও মানসিক প্রতিবন্ধি। ছোট বোনটা ভাল আছে। জীবন যুদ্ধে মাথা উঁচু করে লড়াই করে বাঁচতে চায় সে। পরিবারের সবাইকে নিয়ে একটু সুখে থাকার আশায় রোজ উপজেলার রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেরাই বিক্রির আশায়। পরিবারের সবাইকে একটু সচ্ছলতা দিতেই আমার পথে পথে ফেরী করা। ভিক্ষা চাইতে লজ্জা লাগে। সারাদিনে সর্বোচ্চ এক থেকে দুই শত টাকা আয় হয় তাতেই সে খুশি। অন্ধ হয়েও ভিক্ষা করতে রাজি নয় আঃ হাকিম। তার ইচ্ছা হালাল পথে সৎ উপার্জন করে পরিবারের সবাইকে নিয়ে সুখে থাকবার। অন্ধ আঃ হাকিম বলেন কোন বিত্তবান ও সরকারী ভাবে তাকে একটা দোকান ও পুঁজি দিলে কষ্ট করে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরতে হতো না।