মোঃসৌরভ শেখ,বিশেষ প্রতিনিধিঃ

মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) সকাল ৯টার পর থেকেই জামগড়া,কাঠগড়া,নরসিংহপুর,নিশ্চন্তপুর ও আশুলিয়া এলাকার আশপাশের শ্রমিকরা মহাসড়কে নেমে আন্দোলন শুরু করে। এসময় তারা বেতন বৃদ্ধির দাবি জানান। এদিকে পরিস্থিতি মোকাবেলার বিবেচনায় কয়েকটি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।

কারখানা শ্রমিক ও শিল্প পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে গাজীপুর, আশুলিয়া এলাকায় অবস্থিত স্টারলিং এ্যাপারেলস লিমিটেড,কেনাইট এ্যাপারেলস লি. শারমিন গ্রুপ, হামিম গ্রুপে,অনন্ত এবং কোনাবাড়ি এলাকার এলজেড লিমিটেড,এমবয় ফ্যাসন,ডেবোনেয়ার, সেতেরা, ওরিয়েন্ট এলিউর লিনজেরী লিমিটেড নামক কারখানার সামনে শ্রমিকরা সকালে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে। শ্রমিকরা তাদের বেতন ২৫ হাজার টাকা করার দাবি জানায়। এছাড়া মৌচাক এলাকার গ্লোবাস, কোকোলাসহ বেশ কয়েকটি কারখানা শ্রমিকরা একই দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেছে।

আন্দোলনরত শ্রমিকরা জানান, বর্তমানে যাদের বেতন ৭ হাজার থেকে ৮ হাজার টাকা দেওয়া হচ্ছে, তাদের বেতন ২৫ হাজার টাকা করতে হবে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে বর্তমান বেতনে তাদের চলতে খুব কষ্ট হচ্ছে। মাস শেষ হওয়ার আগেই বেতনের টাকা ফুরিয়ে যাচ্ছে। তাদের অমানবিক জীবনযাপন করতে হচ্ছে বলে জানান তারা।

গতোকাল এবং আজ আশুলিয়া সড়কে আন্দোলন ক্রমাগত ছড়িয়ে পড়লে এবং আন্দোলনরত শ্রমিকরা বিভিন্ন ফ্যাক্টরিতে ভাংচুর করলে পরিস্থিতি মোকাবেলার এক পর্যায়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে টিয়ার সেল এবং গ্যাস ছাড়ে,যাতে করে আন্দোলনকৃত শ্রমিকরা পুলিশের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে ইট পাটকেল ছোড়ে,এদিকে গতোকালের আন্দোলনের সময় নিশ্চিতপুর অনন্ত গ্রুপের সামনে দুজন পথচারী গুলি বিদ্ধ হন এবং একজন নিহত হন বলে যানা যায়।

গাজীপুর শিল্পাঞ্চল পুলিশ-২ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মঈনুল হক বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই শ্রমিকরা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের কোনাবাড়ী, মৌচাক ও শফিপুর এলাকার বিভিন্ন পয়েন্টে জড়ো হয়ে মহাসড়ক অবরোধ করছে। আমরা গিয়ে তাদের বুঝিয়ে মহাসড়কে থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরপরই তারা মহাসড়কের অন্য কোনো অংশে অবরোধ তৈরি করছে। এতে মহাসড়কে যান চলাচলে বিঘ্ন তৈরি হচ্ছে।

গাজীপুর জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) নাজমুস সাকিব খান বলেন, শ্রমিকরা মহাসড়কের যে স্থানেই অবরোধ করছে সঙ্গে সঙ্গে গিয়ে তাদের বুঝিয়ে সেখান থেকে সরিয়ে দিচ্ছি। আবার মহাসড়কের অন্য আরেক জায়গাতে তারা অবরোধের চেষ্টা করছে। সাধারণ মানুষের চলাচলে যেন বিঘ্ন না ঘটে, কোনো ধরনের ক্ষতি না হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমরা পরিস্থিতি বিবেচনা করছি। এখনো আমরা হার্ড লাইনে যাওয়ার কোনো সিদ্ধান্ত নেইনি। যেকোন পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুলিশ প্রস্তুত আছি এবং আমরা সতর্ক অবস্থানে আছি।