মোঃ নুর ইসলাম মৃধা,স্টাফ রিপোর্টারঃ
পটুয়াখালীর গলাচিপায় ১০ লক্ষ টাকা ঘুষ বানিজ্যে ক্রয় সূত্রে কবলা মূলে একযুগ অধিক সময় ভোগ দখলীয় ভবনসহ ১৪.৫০ একর জমি অন্যেদেরকে বি.এস জরিপ দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে দিয়ারা অপারেশন বরিশালের আপত্তি অফিসারসহ ৩ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের মহা- পরিচালক এর কাছে লিখিত অভযোগ করেছেন পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডের ভুক্তভোগী মোঃ নজরুল ইসলাম।
এ অভিযোগ সূত্রে জানগেছে অভিযোগকারী নজরুল ইসলাম গলাচিপার মোঃ শাহ আলমের কাছ থেকে ২০০৭ সালের ১২ ফেব্রুয়ারী গলাচিপা মৌজার এস.এ -৩০,৩৬ নং দাগের ৪.৫০ একর জমি ক্রয় করেন, যার এস.এ খতিয়ান নং ১০,২৮,৩৮,১১৯ এবং একই এলাকর ইদ্রিস মিয়ার কাছ থেকে একই সালের ২৮ অক্টোবর ৬৫৩ নং দলিল মূলে এস এ ৩৬ নং দাগ হতে ৪. ০০ একর জমি ক্রয় করেন, যার এসএ খতিয়ান নং-২৫। এছাড়া নজরুল ইসলাম তার স্ত্রী মোসাঃ ছালমা বেগমের নামে আলাউদ্দিন মাতুব্বরের কাছ থেকে একই বছর ২০০৭ সালের ৪ নভেম্বর ৬৬৪২ নং দলিল মূলে গলাচিপা মৌজার ১২৭ নং খতিয়ানের ২৯/৪৯৩ নং এসএ দাগ হতে. ৭৫ একর জমি ক্রয় করেন। তার ( নজরুল ইসলাম) পুত্র সৈকত ইসলাম নুরের নামে স্থানীয় শরুপ জান বিবি ও ফিরোজা বেগমের কাছ থেকে ২০১১ সালের ২৫ এপ্রিল ২৭৪৭ নং দলিল মূলে ০.৭৫ একর জমি কবলা মূলে ক্রয় করে, যার এসএ খতিয়ান নং- ১০ ও দাগ নং- ৩০,৩৬। এ ছাড়াও পুত্র সৈকত ইসলাম নুরের নামে স্থানীয় রাজা মিয়াগংদের কাছ থেকে ২০১২ সালের ০৩.০১.২০১২ ইং তারিখ ৬৮/১২ নং দলিল মূলে ৩০, ৩৬ নং দাগ হতে আরো ২ শতাংশ জমি ক্রয় করেন, যার এসএ খতিয়ান নং ১৪০ ও ২৮। এছাড়াও পুত্র নুরের নামে স্থানীয় মোঃ জলিল হাওলাদারের কাছ থেকে ২৪.০২.২০১৪ ইং তারিখ ১৩৮১ নং দলিল সূত্রে উক্ত মৌজার এসএ ৩০ নং দাগ হতে ২ শতাংশ জমি ক্রয় করা হয়, যার এসএ খতিয়ান নং ২৮। নজরুল ইসলাম তার এবং তার স্ত্রী ও পুত্রের নামে উক্তসব ব্যক্তিদের কাছ হইতে গলাচিপা মৌজার ৪৯ নং জেএল এর এসএ ৩০৩৬ নং দাগ হইতে মোট ১৪.৫০ একর জমি ক্রয় সূত্রে মালিক হয়ে, এ জমিতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সৈকত মহল আবাসিক হোটেল ( পৌরসভা লাইসেন্স নং-২০১৮/R-০৬ ফায়ার লাইসেন্স নং- এডিপটুয়া-৮৮-২১-২০২২-২০২৩) এবং বসতঘর, বাড়ি, বাগান- বাগিচা নির্মান করে বসবাস করে আসছেন।
ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের মহা- পরিচালক ও চার্জ অফিসার দিয়ারা অপরেশন বরিশালে পৃথক অভিযোগে মোঃ নজরুল ইসলাম বলেছেন, আপত্তি অফিসার দিয়ারা অপারেশন বরিশালের মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন, একই অফিসের আপত্তি অফিসার সলিল কিশোর চাকমা, ফিল্ড অফিসার মোঃ জাফর ও অফিস সহকারী মোঃ খোকন সিকদার ২৫.১১.২০২০ ইং তারিখ আনুমানিক সকাল ৯ ঘটিকায় গলাচিপা পৌরভবনে তাদের অফিসে বসে জমি জরিপ করে দেয়ার কথা বলে পাঁচ লক্ষ টাকা ঘুষ দাবী করে। এ ঘুষ টাকা দিতে অপারগতা স্বীকার করায় উক্ত আপত্তি অফিসার জাহাঙ্গীর হোসেনগং ২৬.১১.২০২০ইং তারিখ সকাল আনুমানিক ১০.৩০ মিনিট সময় পৌরভনের অফিসে বসে স্থানীয় মোঃ নাসির উদ্দিন, রহিম আজাদ ও মোঃ রুহুল আমিনদের কাছ থেকে ১০ লক্ষ টাকা ঘুষ নিয়ে তাদের নামে অভিযোগকারী নজরুল ইসলামের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান সৈকত মহল আবাসিক হোটেল, বসতঘর, বাগান- বাগিচাসহ ১৪.৫০ একর জমি বিএস জরিপ করে দেয়।
ভুক্তভোগী মোঃ নজরুল ইসলাম, উক্ত আপত্তি অফিসার মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন, সলিল কিশোর চাকমা, মোঃ জাফর ও অফিস সহকারী খোকন সিকাদারের অবৈধ কর্মকান্ডের বিচার এবং তার কবলাকৃত ভোগদখলীয় জমি ডিজিটাল দিয়ারা বি.এস জরিপ পাইতে পারে তার জন্য ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের মহ- পরিচালকসহ সংশ্লিস্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষগনের কাছে আকুতি করেছেন।
এ ব্যাপারে ৩০ ধারার আপত্তি অফিসার সলিল কুমার চাকমা অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, অভিযোগকারী মোঃ নজরুল মিয়াকে ৪২ ক ধারায় আপিল করার পরামর্শ দিয়েছি। যা শুনানীর জন্য আছে। আপত্তি অফিসার মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেনও ঘুষ বানিজ্যের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি এখন ব্যস্ত আছি। জরিপ টিমের ফিল্ড অফিসার মোঃ জাফর বলেন স্যারেরা করেছেন, আমি এ জরিপ করি নাই। অভিযোগকারী মোঃ নজরুল ইসলাম জানান, আমার ভোগদখলীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠাসহ ১৪.৫০ একর জমি অবৈধভাবে ১০ লক্ষ টাকা ঘুষের বিনিময়ে অন্যদের নামে বিসিএস জরিপ(রেকর্ড) করার সাথে জড়িতদের বিচার চাই। দিয়ারা অপারেশন বরিশালের আপত্তি অফিসারসহ ৩ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের মহা- পরিচালক এর কাছে ৪২ ক ধারায় আপত্তি করেছি। শুনানীর জন্য আছে।