এ এম রিয়াজ কামাল হিরণ, চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধিঃ

চলছে পবিত্র রমজান মাস। ঈদ ঘনিয়ে আসছে। আর কয়েকদিন পরেই ঈদ। ঈদকে ঘিরে চট্টগ্রামে প্রতিটি মার্কেটে কেনাকাটা ইতিমধ্যে বেশ জমে উঠেছে। মার্কেট থেকে শুরু করে ফুটপাত রাস্তা ঘাট সবখানেই কাষ্টমারের ভিড় চোখে পড়ার মতো। সবাই বেচাকেনা নিয়ে ব্যস্ত। এরইমধ্যে হিজড়াদের চাঁদাবাজি ও অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ।

ঈদকে সামনে রেখে হিজড়াদের উপদ্রবে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন চট্টগ্রামের বড় বড় মার্কেটের ব্যবসায়ী ও দোকান মালিকরা ও সাধারণ মানুষজন। ১৫/২০ জনের দল নিয়ে সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি চলছে তাদের চাঁদাবাজি। বড় দোকান ৫০০ থেকে ৪০০ এবং ছোট দোকানে ৩০০ থেকে ২০০টাকা এবং খাবারের দোকান ৩০০ করে চাঁদার দাবি হিজড়াদের। কেউ কম দিতে চাইলে হাতে তুড়ি বাজিয়ে দোকান ঘিরে রাখে, মালামাল ও পণ্য লুটপাট করে এবং দোকানীকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে হিজড়ারা। দাবিকৃত টাকা তাদের দিতেই হবে।

২ এপ্রিল (মঙ্গলবার) সন্ধ্যার পর সরেজমিনে গিয়ে দেখতে পায় চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজার গুলজার টাওয়ার, মতি টাওয়ার ও মতি কমপ্লেক্সে হিজড়াদের চাঁদাবাজির ছবি তুলতে গেলে তাতে বাধা দেয় তারা এবং অশ্রাব্য ভাষায় গালি দিয়ে দ্রুত এদিক সেদিক পালিয়ে যায় তারা। এ সময় সাবিনা পরিচয় দানকারী একজন হিজড়া দলনেতা বলেন, ‘সরকার আমাগো খাইবার পরবার দিলে আমরা আর চাঁদা তুলতাম না’। সরকারকে বলেন, হিজড়াদের পুনর্বাসন করতে।

হিজড়াদের দ্বারা হয়রানির শিকার হয়নি, এমন মানুষ খুব কম আছে। এটা জানা কথা যে, হিজড়ারা সাধারণ মানুষকে কম-বেশি হয়রানি করে থাকে। ইদানীং চট্টগ্রামে হিজড়ারা বেশি আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছে।

হঠাৎ করেই এসে টাকা দাবি করে। না দিতে চাইলে অশ্লীল ভাষা, ধাক্কাধাক্কি, সবার সামনে নগ্ন হতে চাওয়াসহ বিভিন্ন অশ্লীল আচরণ ও তুমুল হট্টগোল সৃষ্টি করে রাস্তাঘাটে, এমনকি তারা স্কুল, কলেজ, ব্যাংক, হাসপাতালের মত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও।

চট্টগ্রামে সাধারণ মানুষ এভাবেই হিজড়াদের দ্বারা নিপীড়িত হয়ে আসছে দিনের পর দিন। হাটবাজার, রেল স্টেশন ও বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ডে এদের বেশি দেখা যায়। ফলে বাজার করতে আসা মানুষ ও বিভিন্ন গন্তব্যের যাত্রীরা এদের দ্বারা সবচেয়ে বেশি অত্যাচারিত হচ্ছে।

এছাড়াও সবচেয়ে উদ্রেকজনক বিষয় হচ্ছে ব্যবসায়ীদের ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেওয়ারও ভয় দেখায়। ব্যবসায়ীরা মান ইজ্জতের ভয়ে কিছু বলতে পারে না। হিজড়াদের কাছে এক প্রকারের জিম্মি দশার মতো হয়ে পড়েছে ব্যবসায়ী ও স্থানীয় লোকজন। ইজ্জত হারানো ও ঝামেলা পড়ার ভয়ে কেউ তাদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগও করে না।

হিজড়াদের বির্তর্কিত কর্মকান্ডে অসহায়ত্ব প্রকাশ করা ছাড়া মানুষের আর কোন উপায় নেই।