২০১৬ সালে the economist এর একটি শিরোনাম ছিল এই নামে  “the million dollar baby” এটা কী, কোন মানব সন্তান ?

না,   প্রতিবেদনটা  ছিল আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স নিয়ে | আসলে  তারা মূল্যটা কম বলেছিলো। তা হওয়া উচিত ছিল ” the  billion dollar baby” । কেননা ২০১৫ সালে ফেইসবুক, গুগল।, মাইক্রোসফাট , আমাজন , উবার   ৮.৫ বিলিয়ন ডলার ব্যায়  করে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স   গবেষণার পিছনে।  যা কিনা আমেরিকার শিক্ষামন্ত্রলয়  বাজেটের   ৮ গুন্ বা এই টাকা দিয়ে আপনি ৪ বার  ফুটবলার নেইমার  কে কিনতে পারবেন |

এই শিশুর উপর কেন এত কদর , কি আছে তার মাঝে ,কেন তার এত কদর। বলা হয় আগামীর প্রজুক্তি দুনিয়া শাসন করবে এই শিশুটি।  এই সিরিজে আমরা তাই দেখবো।

আজকে  আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর বর্তমান সময়ের প্রজুক্তি  ড্রাইভেরলেস কার

উদাহরণ হিসাবে থাকছে গুগল ড্রাইভেরলেস কার ……………….

কেমনে চলে চালক  ছাড়া এই গাড়ী ?  আসলে একে চালক ছাড়া বললে ভুল হবে। এই গাড়িতে ফিজিক্যালি  কোনো চালক হয়তো  নাই বটে কিন্তু  আছে লজিক্যালি  আর তিনি হলেন গুগল আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স সফটওয়্যার |

গাড়িটির বিভিন্ন অংশে আছে ৮ টি সেন্সর | সবার উপরে যে ক্যামেরাটা  দেখছেন এর নাম হল LiDER (light detection and ranging ) ইনি লেজার  প্রজুক্তি ব্যবহার করে আশেপাশের ২০০ মিটার এলাকার ম্যাপ তৈরী করেন । LiDER কে বলা হয় চালকবিহীন গাড়ীর প্রধান চোখ , এর আরো দুটি চোখ আছে windscreen এর দুই পাশে , যা পথচারী , অন্যগারি ,ট্রাফিক সিগন্যাল ,রাস্তার সংকেত দেখার কাজ করে | অন্য সেন্সর গুলোর মাঠে আরো আছে rear-mounted aerial sensor এটি গাড়িকে সঠিক রাস্তায় রাখতে সাহায্য করে ।জিপিএস সিস্টেম কে কাজে লাগিয়ে আর একটি সেন্সর , গাড়ির অবস্থান ও গন্তব্য ঠিক করে।   গাড়ির বাম্পের নিচে থাকে রাডার সেন্সর এটা গাড়িকে রাস্টার উপর রাখে ।আরো আছে অডিওমেট্রি সেন্সর ও আল্ট্রাসনিক সেন্সর।

সব সেন্সর গুলা একসাথে কাজ করে ঠিক এই রকম একটা থ্রীডি ম্যাপ তৈরী করে। যার সাহায্য আশেপাশের সবকিসুর ব্যাপারে জানতে পারে।কোনো গাড়ি আছে কিনা, ট্রাফিক সিগন্যাল কি ,কোনদিকে মোর নিতে হবে  ব্লা ব্লা ব্লা ব্লা ব্লা ব্লা। ………

এই সেন্সর গুলো প্রতিনিয়ত যে প্রাচীর প্রচুর পরিমান ভিজ্যুয়াল   ডাটা উৎপন্ন করে তা প্রোসেস হয়  আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স সফটওয়্যারে।  তার উপর ভিত্তি করে   সিদ্ধান্ত নেয় গাড়ী কোনদিকে যাবে।   ইনি হলেন সেই লজিক্যাল  চালক।

এটা আধুনিক বিজ্ঞান এর একটা বড়  চমক কারণ, মানুষ যেভাবে রাস্তায় গাড়ী চালানোর সময়  চোখ দিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নিয়ে গাড়ি চালায়। ঠিক একই কাজ করে  এই গাড়ী , তার সেন্সরগুলি ব্যাবহার করে। অর্থাৎ এটাও মানুষের মতো সিদ্ধান্ত নিতে পারে। আর গাড়ির এই শেখাকে বা শেখনোকে বলাহয় মেশিন লার্নিং , যা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর  প্রধান একটা অংশ।

এটা কতটা নিরাপদ

সবকথার বড়  কথা “একটা সফটওয়্যারের  হাতে গাড়ির স্টিয়ারিং  তুলে দিয়ে (যদিও গাড়িতে কোনো স্টিয়ারিং থাকে না ) পিছনের সিটে  বসে থাকা কতটা নিরাপদ  ।  গুগল এর উত্তর দিয়েছে।  পরিসংখ্যান  বলছে ২০১৩ সালে যুক্তরাজ্যে গাড়ি দুর্ঘটনায় প্রাণহানি হয় ১৭৩০ জন  আহত ১,৮৫,৫৪০ জন।  আর সারা দুনিয়ার তে মৃত্যুর  সংখ্যাটা ছিল  ১২ লক্ষ ।আর এই মৃত্যুর ৯০ ভাগের   জন্য দায়ী মানব  চালকের  ভুল ।

অপরদিকে ,

গুগল কার রেকর্ড ১১.২ লক্ষ কিলোমিটার পারি দিয়েছে কোনো প্রকার দুর্ঘটনা ছাড়া । আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স সফটওয়্যারের হাতে গাড়ী ছেড়ে দিয়ে আপনি নিঃচিন্তে ঘুমাতে পারেন।

শুধু গুগল নয় মতো টেসলা , ঊবারের মতো  কোম্পানীরাও তৈরি করছে গাড়ি চালকবিহীন গাড়ি ।নিরাপদ রাস্তার জন্য পরের দশকেই রাস্তায় যে এরা  রাজ্ করবে   তাআর বলার অপেক্ষা রাখে না।

চলবে…

 রৌসুল আজম  সুমন
  ব্লগার (www.rusulazom.me)