ভিক্টর বিশ্বাস চিতা, স্টাফ রিপোর্টারঃ

কুষ্টিয়ার কুমারখালীর পান্টি গ্রামে জমি- জমা সংক্রান্ত জেরে পরিকল্পিতভাবেই সামসুল আলমের নির্দেশে হামলা করে ২ জনকে আহত করেছে তারই দুই ছেলে বাবুল, ইয়াছিন,ভাই ছরোয়ারসহ সহযোগীরা।জানা যায় , দীর্ঘদিন ধরে জমি -জমা সংক্রান্ত জের ধরে রুহুল আমীন ও সামসুল আলমের বিরোধ চলে আসছে। এই বিরোধের জের ধরে ৭ অক্টোবার আনুমানিক দুপুর ১ টার সময় রুহুল আমীন (৫৮) ও ছেলে মাসুদ(২০) ও মেয়ে মালা খাতুন(১৮) এর উপর পরিকল্পিত ভাবে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করে সামসুল আলম( ৬২) পিতা মৃত হেসেন আলীসহ তার দুই ছেলে বাবুল(৩৫), ইয়াছিন (১৯), ছরোয়ার বিশ্বাস (৬৪) ও তার পরিবারের লোকজন মিলে এই হামলা করেছে। হামলার এক পর্যায়ে বাবুলের হাতে থাকা রড দিয়ে মাসুদ (২০) কে হত্যার উদ্দেশ্য মাথায় আঘাত করাসহ ডান হাতের কাধের উপরে হাড়ভাঙা আঘাত করে, ইয়াছিনের হাতে থাকা হাতুর দিয়ে মাথায় আঘাত করলে সেই আঘাত লক্ষ্যভুষ্ট হয়ে আমার বোনের ডান হাতের কব্জায় লেগে মারাত্বক আহত হয় । পরে গুরুতর আহত অবস্থায় কুমারখালী ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

আহত মাসুদ জানান, পরিকল্পিত ভাবে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্য সামসুল আলমের নির্দেশে বাবুলের হাতে থাকা রড দিয়ে মাথায় আঘাত ও ডান হাতের কাধের উপরে হাড় ভাঙা আঘাত করে। এঘটনার আগেও আমাকেসহ গত ১৬-১২-২০২২ইং রোজ শুক্রবারের দিন রাত ৮ টার সময় আমার নিজ আধুনিক বস্রালয় কাপুরের দোকানে উপর হত্যার উদ্দেশ্য আমাকে কামড় মেরে ডান হাতের একটি আঙুল রক্তাক্ত করে এবং দোকানে থাকা আমার ভাইয়ের উপর হামলা করে মারপিট করে। পরে আমি কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে গিয়ে দু” দিন চিকিৎসা অবস্থায় ছিলাম। এরকম একের পর এক আমারসহ পরিবারের লোকজনের মারধর করা সহ ভয়ভীতি ও প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে যাচ্ছিল। তারই ধারাবাহিকতায় ৭ অক্টোবার আজ আমাকে হত্যাসহ পরিবারের উপর এহামলা করেছে। এই হামলায় আমার ছোট বোনের ডান হাত ভেঙে দেওয়ার উদ্যেশে মারাত্বক আঘাত করাসহ বাবা, মা, ভাই মেহেদিকেও বেধরক ভাবে মারপিট করেছে।স্থানীয় এলাকাবাসীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে সামসুল আলম ও রুহুল আমিনের মধ্যে জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। এই বিরোধের জেরে গত ছয়মাস আগে তাদের বাড়ির মোট ২৯ শতক জমি সমান দু’ভাগে ভাগ- বন্টন করে দেয় এলাকার সন্মানীয় গণ্যমান্য মাতুব্বার ব্যাক্তিরা। তারপর থেকে একের পর এক চলে আসছে বিরোধ। এই বিরোধের জেরে স্থানীয় মাতুব্বারগনদের সমান অংশ ভাগ করে দেওয়া জায়গাতে রুহুল আমীন দোকন ঘর করতে গেলে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ভাবে লাঞ্চিত হয়েছে ও এখন পর্যন্ত প্রাণনাশের হুমকিও প্রতিনিয়ত দিয়ে যাচ্ছে সামসুল আলম,বাবুল,ইয়াছিনসহ স্থানীয় কিছু নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কিছু অসাধু ব্যাক্তিরা।

রুহুল আমিন জানাই, আমার বাবার বসতবাড়ীর মোট সম্পওি ২৯ শতক আছে। আমরা দু’ ভাই, গত ১০ বছর ধরে আমার বাড়ীতে এই জমিজমার বিষয় নিয়ে ৬৩ বার শালিশ হয়। এই গত শালিশের মাতুব্বারদের রায় গুলো আমার ভাই সামসুল আলম কোন ভাবেই মানেন না। গত ছয় মাস আগে আমার নিজ বাড়ীতে মাতুব্বারগন ও এলাকার লোকজন নিয়ে বসতবাড়ীর ২৯ শতক জমি শালিশের মাধ্যমে দু’ ভাইয়ের মধ্যে সমান ভাগে ভাগ বন্টন করে দেয়। এতে করে আমার বসতবাড়ীর জমির অংশ আমাকে পেছনে বেশি ও অল্প জমি রাস্তার পাশ থেকে সর্বমোট ১৪ শতক ৫০ পয়েন্ট করে ভাগ করে দেয় ও আমার ভাই সামসুল আলমকে রাস্তার সাথে থাকা ভালো জমি ১৪ শতক ৫০ পয়েন্ট ভাগ করে দেয়। আমার বসতবাড়ীর সামনের জমি নিয়ে আমাকে পেছনের জমি দিয়ে প্রায় জমির মূল্য অনুসারে আমাকে আনুমানিক ২০ লক্ষ টাকা ঠগায়। তারপরও আমি আমার ভাই ও মাতুব্বারদের কথায় জোরপূর্বক মেনে নিতে বাধ্য করে। বর্তমানে আমার বসতবাড়ীর উপর ঘর ও রাস্তার পাশে থাকা জমির উপর গত কিছু দিন আগে ছয়রুম বিশিষ্ট মার্কেট করেছি ও মার্কেটের কিছু অংশ কাজ বাকী রেখে কাজ বন্ধ করে রেখেছিলাম। এখন মার্কেটের বাকী অংশের কাজ করতে গিয়ে নানা রকম ভাবে ভয়- ভীতি, হেনস্তা, ও প্রাণনাশের হুমকি প্রতিনিয়ত দিয়ে যাচ্ছে। পরে আমার ছেলে মোঃ মুকুল হোসেন গত ৩/৯/২০২৩ তারিখে কুমারখালী থানায় গিয়ে একটি জিডি করে এসেছিল। এরপরও এলাকার অসাধু ব্যাক্তিদের টাকা দিয়ে বুদ্ধি- পরামর্শ নিয়ে মার্কেটের কাজে বাধা প্রধান করছে সহ আমাকে হত্যার নানা পরিকল্পনা করে যাচ্ছিল। আমাকে সহ আমার পরিবারকে অকত্য ভাষায় গালা গালি সহ ঝগড়া বিবাদ বাধানোর চেষ্টাও অব্যহত রেখেছেলি। পরে আজ দুপুর ১ টার সময় আমার ছোট ছেলে মাসুদের মাথায় আঘাত করে ও মেয়েকে হাতুর দিয়ে ডান হাতে মারাত্বক আঘাত করাসহ আমাকে ও মেজ ছেলে মেহেদিকে বেধরক ভাবে বাঁশের লাটি ও রড হাতুরি দিয়ে মারপিট করেছে।এঘটনায় আহত মাসুদের বড় ভাই জানান, দীর্ঘদিন ধরে আমাদের ভাগ করে দেওয়া জমির উপর কাজ করতে গেলে বাধা প্রদানসহ নানা রকম ভাবে সামসুল আলমসহ তার ছেলেরা আমাকে সহ আমার পরিবারের সবাইকে ভয়ভীতি, প্রাণনাশের হুমকিসহ প্রতিদিনই দিয়ে আসছিল। এইজন্যই গত ৩-৯-২০২৩ ইং তারিখে কুমারখালী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেছিলাম। উক্ত সাধারণ ডায়েরীর বর্ণিত ঘটনা তদন্ত হওয়ার আগেই আজকে এঘটনা ঘটিয়েছে ও আমার ভাইকে মাথায় আঘাত করে রক্তাক্তসহ ছোটবোনকে হাতুর মেরে ডান হাত ভেঙে দেওয়ার উদ্দেশ্য মারাত্বক ভাবে আঘাত করে।

এ বিষয়ে কুমারখালী থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।