অথই নূরুল আমিন
কবি কলামিষ্ট ও রাজনীতি বিশ্লেষক..

আজকে প্রায় চারটি বছর ধরে। আমাদের দেশে নিত্য পণ্যের দাম বড় বেসামাল। কোনো ভাবেই কোনো পণ্যের মূল্য যেমন করা যাচ্ছে না নির্ধারণ। তেমনি করা যাচ্ছে না নিয়ন্ত্রণ। যার ফলে নিম্ন আয়ের মানুষ গুলো প্রতিনিয়তই সরকারকেই দায়ী করে চলেছে।

সরকার শুধু দায়ী তা নয়। সরকারের হাত আছে। সরকার দুর্নীতিবাজ। বাণিজ্যমন্ত্রী অযোগ্য। সাথে আরো কত কি বলে গাল মন্ধ করেই চলেছে দিনরাত।

কথাটা বলতেই হবে। আমরা যদি জন স্বার্থকে আগে প্রাধান্য দেই। তাহলে তো ভালো হয়। কিন্তু এ পযর্ন্ত সরকারি ভাবে অথবা সরকারের দায়িত্বে থাকা কোনো মন্ত্রী এমপি অথবা সচিব। তারা কেউ এ ব‍্যাপারে কোনো মুখ খুলছে না। জন সমক্ষে। এই পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি নিয়ে কেউ কোনো ব‍্যাখ‍্যাও দিচ্ছে না।

এরকম ভাবে ঘুমিয়ে আছেন কেন। সরকারের দায়িত্বে থাকা কলাকৌশলীরা। আপনারা তো অবশ্যই এর ব‍্যখ‍্যা দিতেই পারেন। আমি বলি এটা কেন করছেন না।
আপনারা জনগণের সরকার। রাষ্ট্র পরিচালক। পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি নিয়ে ভালো অথবা মন্ধ যে কোনো একটি দিক তোলে ধরার একান্ত প্রয়োজন ছিল। তা করেননি।

যাক সে কথা। পণ্যের মধ‍্যে হঠাৎ করে চিনি আটা ও ময়দার দাম বেসামাল বেড়ে গেল। তা তো বাড়বেই। তারও তো কারণ আছে বহু। তার কারণ চিনি হয় আখ থেকে, আর আটা হয় গম থেকে। আখ চাষী ও গম চাষীরা বারবার বহু ভাবে লোকসানী হয়ে। তারা আখ চাষ ও গম চাষ বাদ দিয়ে দিয়েছে।

তাহলে কি করা? চিনি আর আটা এখন বাহির থেকে আমদানি করা হচ্ছে। তারপরও সরকার সেই খোঁজখবরটা নিচ্ছে না। দেশের কৃষকেরা কেন আখ চাষ গম চাষ করছে না। এখানে সরকারি ভাবে দেশজুড়ে একটি জরিপ দেয়ার দরকার ছিল।
বতর্মান চিনি এবং আটা ময়দা বাহির থেকে আমদানি করতে গেলে এখানে পাঁচ ধরনের বাড়তি খরচ হয়।
এই খরচ গুলো পণ্যের উপরে যোগ করলে পণ্যের দাম বাড়বেই।

প্রায় তিন বছর ধরে আমাদের দেশে সোয়াবিন তেলের দাম বেড়ে গেলো সীমাহীন। আমাদের দেশে সরিষা চাষ তিল চাষ সোয়াবিন চাষের অবস্থা যেন একেবারে নাজেহাল। যার ফলে এই সোয়াবিন তেল শতভাগ বাহির থেকে আমদানি করতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত।

এক কথায় আমাদের দেশের কৃষকেরা যেন কৃষি কাজটি করতেই চাচ্ছে না। কেমন জানি সবাই গা ভাসা গা ভাসা ভাব।
এখানে এই কৃষক গুলো কৃষি বিমুখ হয়ে যাওয়ার বেশ কয়েকটি কারণও রয়েছে। তার প্রথমটাই হলো। এক শ্রেণির শিক্ষিত বেকার ছেলেরা আজকে ভাড়ায় চালিত বাইকের ড্রাইভার। যার সংখ্যা প্রায় 20 লাখেরও বেশি সারাদেশে।
আরেক শ্রেণির অশিক্ষিত যুবকেরা তারা সারাদেশ জুড়ে অটোরিকশা অটো সিএনজি চালানো শুরু করেছে। তার পরিমাণ প্রায় ষাট লাখের ও বেশি।

আরেক শ্রেণির লোক পাড়া মহল্লায় বিভিন্ন দলের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। তারাও অনেকেই কৃষি বা খামার করছে না। ভালো ভালো জামা কাপড় পরে ওরাও যেন পাক্কা নেতা। যার সংখ্যা এক কোটিরও বেশি।
দেশে অসংখ্য সরকারি কর্মকর্তা রয়েছেন। তাদের তো এই কৃষি খামার করার মতো সময়ও নেই। বিদেশে রয়েছে প্রায় পঞ্চাশ লাখের বেশি শ্রমিক প্রবাসী। তারা দেশে নেই। তাদের পরিবার রয়েছে বাংলাদেশে। তারাও বিদেশ থেকে আসা টাকা দিয়ে নগদে পণ্য কিনে খাচ্ছে।
চাল ডাল মাছ তরকারিসহ ইত্যাদি পণ্য।

সরকারের গননায় ষোল কোটি মানুষের মধ‍্যে দশ লক্ষ ভোটার থাকলে তারা সবাই প্রাপ্তবয়স্ক। এই দশ লক্ষ ভোটারের মধ‍্যে ছয় লক্ষ লোকই না করছে কোনো কৃষি। না করছে কোনো খামার।
তাহলে ডিম ডাব সবজি যেহেতু আমদানি করা হয়না।
এর মূল্য বৃদ্ধি তো হবেই। যেহেতু উৎপাদনের চেয়ে চাহিদা বেশি রয়েছে।
প্রিয় পাঠক আমার এই কলামে আজকে সিন্ডিকেটের কারসাজির কথা কিছু লিখছি না। আগামী কোনো লেখায় সিন্ডিকেট সমাচার নিয়ে লিখব। সে পযর্ন্ত সবাই ভালো থাকুন। সুস্থ থাকুন।
অথই নূরুল আমিন
কবি কলামিষ্ট ও রাজনীতি বিশ্লেষক।