এস এস সোহান ও এস এস সাগর, বাগেরহাটঃ

৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনে বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বহিস্কৃত যুবলীগ নেতা আবু জাফর মোঃ আলমগীর হোসেনের কাছে জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অশোক কুমার বড়ালের ভরাডুবি হয়েছে। নির্বাচনে আবু জাফর মোঃ আলমগীর হোসেন দোয়াত কলম প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৩৬ হাজার ১১১ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দি অশোক কুমার বড়াল মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ২৭ হাজার ৮৫৭ ভোট। আবু জাফর মোঃ আলমগীর হোসেন ৮ হাজার ২৫৪ ভোট বেশী ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান অশোক কুমার বড়ালের এই ভরাডুবি নিয়ে  উপজেলাজুড়ে আলোচনা-সমালোচনা করছেন নাগরিকরা। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও চলছে নানা ধরণের বিষোদগার।সাধারণ ভোটাদের ভাষ্যমতে, ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী শেখ মাহাতাবুজ্জামানের তালা প্রতীকের ভারেই মোটরসাইকেলের চাকা পাঞ্চার হয়েছে।জানা গেছে, চিতলমারী উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন আবু জাফর মোঃ আলমগীর হোসেন। ২০০০ সালের ২০ আগষ্ট বাগেরহাট শহরের সাধনার মোড়ে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন আওয়ামী লীগ ও হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের নেতা এ্যাড. কালিদাস বড়াল। কালিদাস বড়াল হত্যা মামলায় আলমগীর হোসেনকে আসামী করা হয়। সেই সাথে তাকে দল থেকে বহিস্কারও করা হয়। দীর্ঘদিন কারাভোগের পর মামলায় তিনি নির্দোষ প্রমানিত হওয়ায় বেকসুর খালাস পান। এরপর বাড়িতে ফিরে বারবার বাদশা বাহিনীর হামলার শিকার হন। মূলত হামলা, মামলা ও ক্ষমতাসীনদের অত্যাচারের ফলে আলমগীরের জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে।ভোটার হাসমত গাজী, নজরুল তালুকদার, মিঠু বিশ্বাস ও ফারুক হোসেন জানান, আলমগীরের প্রতি দুর্বব্যবহার, বর্বরতার জবাব দিয়েছেন সাধারন মানুষ। তারা ভালবাসার প্রতিফলন ঘটিয়েছে।  নাম না প্রকাশ করার শর্তে প্রবীণ এক কলেজ শিক্ষক জানান, স্থানীয় কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতার আখের গোছানোর কারণে দলের নিবেদিত প্রাণরা আজ দূরে সরে গেছে। সুযোগ পাওয়ায় সাধারণ ভোটাররা এর যোগ্য জবাব দিয়েছেন।চিতলমারী উপজেলা যুবলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সমীর কর্মকার পাগলা বলেন, ‘শেখ মাহাতাবুজ্জামানসহ কয়েকজন উপজেলায় টিআর, কাবিখা ও টেন্ডারবাজির সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছিল। তাদের কারণে সাধারণ মানুষ অতিষ্ট হয়ে উঠেছিল। সেই সিন্ডিকেট ভাঙ্গতে সাধারণ মানুষ আলমগীর ভাই, সুলতানা ও আজমীর কাজীকে ভোট দিয়েছে। অশোক কুমার বড়াল ও মাহাতাবুজ্জামান দলবেধে এক সাথে ভোট চেয়েছিল। আর মাহাতুজ্জামানের তালা প্রতীকের ভারেই মোটরসাইকেলের চাকা পাঞ্চার হয়েছে।এ উপজেলায় বিপুল ভোটে ভাইস চেয়ারম্যান পদে কাজী আজমীর আলী ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে সুলতানা মল্লিক জয় লাভ করেছেন।