ইকরাম হোসাইন,নবীনগর প্রতিনিধিঃ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে মানসিক ভারসাম্যহীন এক মা তার চার মাসের শিশু সন্তানকে পুকুরে ফেলে হত্যা করেছেন। এ ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে এলাকায়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বিদ্যাকুট গ্রামের মৃত জলিল মিয়ার ছেলে দুবাই প্রবাসী অলি উল্লাহর স্ত্রী রুমা বেগম (২৫) বেশ কিছু দিন যাবৎ মানসিক ও শারীরিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। শুক্রবার রাতে রুমা বেগম তার বড় মেয়ে খাদিজা (৬) ও চার মাস বয়সী অপর কন্যাসন্তান ফাতেমা বেগমকে সাথে নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন।

রাত ২টার দিকে ঘুম থেকে উঠে টয়লেটে যাওয়ার নাম করে ছোট সন্তান ফাতেমাকে বুকে নিয়ে বাড়ির পাশের পুকুরে ফেলে দিয়ে ঘরে এসে ঘুমিয়ে যান। ভোর রাত ৫টায় ঘুম ভেঙে গেলে দেখেন পাশে তার শিশু সন্তান ফাতেমা নেই। সন্তান পাশে না থাকায় চিৎকার শুরু করেন রুমা বেগম।

এ সময় তার আত্মচিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসে। তার পরিবারসহ প্রতিবেশীরা শিশুটিকে খুঁজতে শুরু করে। অনেক খুঁজেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরে তাদের বাড়ির পাশের একটি পুকুরে শিশু ফাতেমার লাশ ভাসতে দেখে স্থানীয়রা ৯৯৯ কল দিলে পুলিশ গিয়ে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা মর্গে পাঠায়।

পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে, কন্যা সন্তান নিয়ে পারিবারিক অশান্তি ও বনিবনা না হওয়ায় মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে রুমা বেগম শিশুটিকে পানিতে ফেলে হত্যা করেছেন।

ঘটনার পর রুমা বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়। কয়েক ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তিনি তার সন্তানকে হত্যার দায় স্বীকার করেন।

এ ঘটনায় শিশু ফাতেমার চাচা দেলোয়ার হোসেন শনিবার (২২ অক্টোবর) নবীনগর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় রুমা বেগমকে একমাত্র আসামি করা হয়েছে।

মামলায় রুমা বেগমকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসী মানসিকভাবে অসুস্থ রুমা বেগমকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।