মোঃসৌরভ শেখ,বিশেষ প্রতিনিধিঃ

সারা দেশব‍্যাপী যেখানে সেখানে পোষ্টার ফেষ্টুন, ডিজিটাল ব‍্যানার লাগানো দেখা যায়। তার 85% পোষ্টার ফেষ্টুন ডিজিটাল ব‍্যানার কোনো না কোনো রাজনৈতিক দলের। এখানে লেখা থাকে ঈদ শুভেচ্ছা। ঈদ মোবারক। বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা। মহান স্বাধীনতা দিবস, দলের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী, অমুক নেতার মুক্তি চাই। মিথ্যা মামলা প্রত‍্যাহার কর করতে হবে ইত্যাদি ইত্যাদি।
এই সকল শ্লোগান এবং দাবী শুভেচ্ছা সবই ঠিক আছে। তবে এই ডিজিটাল যুগে অগণিত ডিজিটাল ব‍্যানার বানানোর ফলে শত সহস্র কোটি টাকা বাহিরের দেশে চলে গেছে। এরকম কথা কিন্তু কোনো দলের কোনো নেতায় কখনও বলেনি। এই পিভিসি কাগজটা কিন্তু বাহির থেকে আমদানি করা। এর রংটা পযর্ন্ত বাহির থেকে আমদানি করা এমনকি মেশিনটাও পযর্ন্ত বাহিরের।
আমরা যে মস্ত বড় এক মস্ত বোকার স্বর্গে বসবাস করি।তার প্রমাণ কিন্তু আমরা নিজরাই। মাশাল্লাহ্
এই যে বিপুল পরিমাণ টাকা ব‍্যায় করে ডিজিটাল ব‍্যানার করে আমরা বাহিরের দেশকে উন্নত করে দিয়েছি। এই ভাবনাটা কিন্তু আমাদের কারোর নেই। শত সহস্র কোটি টাকার ব‍্যানার গত পনেরো বছরে আমরা করেছি। যা না করলে কারো কোনো ক্ষতি হতো না। আমি মনে করি। এই ব‍্যানার মানে নিজের নাক কেটে অন‍্যের যাত্রা ভঙ্গ করার সামিল।
যাক সেকথা। আজকের লেখার প্রসঙ্গ হলো পরিশুদ্ধ রাজনীতি এবং পরিশুদ্ধ মানুষ।
প্রিয় পাঠক। রাজনৈতিক ডিজিটাল ব‍্যানার বেশিরভাগ
করা হয় কর্মীর নামে। কর্মীর পদবী উল্লেখ করে।
এখানেও সব ঠিক আছে। তবে ঐ জায়গায় ডিজিটাল ব‍্যানারটি বেমামান হয়ে যায় সমাজের চোখে। সমাজ যখন দেখে যে কোনো দলের সর্বোচ্চ সম্মানিত প্রধানদের ছবি গুলো উপরে দিয়ে নীচের দিকে একজন বা একাধিক খারাপ ও নোংরা চরিত্রের কমদামী কর্মীদের ছবি বড় করে দিয়ে বিভিন্ন শুভেচ্ছা দিয়ে ব‍্যানার করে বিভিন্ন পাড়া মহল্লা বা ক্লাবের সামনে লাগানো হয়ে যায়। এমনকি সমাজের অন‍্য দামি লোকগুলোর আশা যাওয়ার রাস্তায় বা বিভিন্ন মোড়ে তাদের মাথার উপরে বিভিন্ন জায়গায় ঝুলিয়ে দেয়া হয়। তখন সমাজের চোখে বিষয়টি অসুন্দর বিরাজ করে।
আসলে লেখাটি আমি আমার ব‍্যক্তিগত মতামত থেকে লিখছি। প্রিয় পাঠক অসুন্দর বিষয়টি যদি আপনি না বুঝেন। তাহলে এই লেখার অর্থ আপনিও বুঝবেন না।
রাজনীতি মানে যদি এই হয়, যে যা করবে তাই রাজনীতি। তাহলে তারা যেটা করছে। এটা ঠিকই আছে।
আর রাজনীতির যদি কোনো নীতিমালা থেকে থাকে কোনো আদর্শ থেকে থাকে তাহলে আমার এই লেখাটির অর্থ অবশ্যই আছে।
আমি এই লেখাটি বেশি বড় করব না। এবং খুব বেশি ঘন করেও লিখব না। আমি শুধু বলতে চাই আমাদের দেশের রাজনৈতিক দলের প্রতিষ্ঠাতা গণ বাংলাদেশের অনেক নাগরিকের চেয়ে তারা মূল্যবান । আমার মতে তাদের ছবি যে ব‍্যানারে থাকবে। সেই ব‍্যানারের একই ফ্রেমে কর্মী হিসাবে একজন জন প্রতিনিধি, শিক্ষক, ডাক্তার, অথবা লাইসেন্স প্রাপ্ত ব‍্যবসায়ী থাকবে। এক কথায় সমাজে স্ব স্ব ক্ষেত্রে যাদের কোনো না কোনো ইমেজ আছে। শুধুমাত্র তারাই দলীয় প্রধানগণের ছবিসহ ব‍্যানার করতে পারবেন বলে আইন থাকা জরুরি।
এই লেখক লক্ষ্য করে দেখেছেন। শহরের বখাটে লোক, রিক্সা চোর, ছিনতাইকারী, নেশাখোর, গ্রামের গরু চোর, সিধেল চোর, ডাকাত এমনকি সাজাপ্রাপ্ত মামলার আসামি ব‍্যক্তিটিও রাজনীতির নামে বিভিন্ন দলের প্রধানগণের ছবিটি ছোট করে দিয়ে বখাটে কর্মী বা নেতার ছবিটি বড় করে দিয়ে নানান ধরনের শুভেচ্ছা দিয়ে থাকে।
তখন সমাজের সভ‍্য চিন্তার মানুষগুলো তো একেবারেই অবাক!
আর ঐ ধরনের কম দামি লোকেরা সমাজে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার জন্ম দিয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত।
দেশের সকল রাজনৈতিক দলের প্রধানদের বলছি। বিষয়টি বিবেচনা করে ব‍্যবস্থা নিন। আপনারা নিজেদের একটা সম্মান তো বিশ্বজুড়ে আছে। তা অক্ষুন্ন রাখার চেষ্টা করুন। দল থেকে চোর বাটপার বহিরাগতদের বের করুন। সব দল থেকে এরকম বিধান পাশ হলে এবং কার্যকর ভূমিকা নিলে আশা করি দেশের মানুষ সবাই স‍াধুবাদ জানাবে।
আমরা চাই স্মার্ট বাংলাদেশ। চাই পরিশুদ্ধ রাজনীতি চাই পরিশুদ্ধ মানুষ। চাই সুন্দর সমাজ।
অথই নূরুল আমিন
কবি কলামিষ্ট ও রাজনীতি বিশ্লেষক।